জাতীয় শোক দিবসের আলোচনায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুল লতিফ ভূইয়ার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ উঠেছে।এ নিয়ে সমালোচনার মুখে গত সোমবার তাকে কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে কলেজ কর্র্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্টরা জানান,কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ কর্র্তৃপক্ষ জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গত রবিবার ভার্চুয়াল আলোচনা সভার আয়োজন করে।এতে অংশ নিয়ে কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুল লতিফ বলেন,দেশ স্বাধীন হবার পর এদেশের মানুষ আসসালামু আলাইকুম,বিসমিল্লাহ,খোদা হাফেজ বলতে পারতেন না।বলতে হতো সুপ্রভাত।
বঙ্গবন্ধু ১০ জানুয়ারি দেশে ফেরার পর এ পরিস্থিতি আর ছিল না।অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া প্রধান অতিথি কুমিল্লা-৬ (সদর) আসনের এমপি মুক্তিযোদ্ধা হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার তাৎক্ষণিকভাবে এ শিক্ষককে থামিয়ে দেন।তাকে নিজের বক্তব্যের সপক্ষে দলিল নিয়ে আসতে বলেন।একপর্যায়ে আয়োজকরা আবদুল লতিফকে বাদ রেখে অনুষ্ঠান শেষ করেন।
গত ৮ আগস্ট কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেওয়া অধ্যাপক ড. আবু জাফর খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবু নাসের চৌধুরী।এতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী,মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর কুমিল্লা অঞ্চলের পরিচালক অধ্যাপক সোমেশ কর চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য দেন।
কলেজের ফেইসবুকসহ কয়েকটি পেজে অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার হওয়ায় মুহূর্তে সবখানে ছড়িয়ে পড়ে।এতে রাজনৈতিক মহল,সুশীল সমাজসহ কুমিল্লার সর্বস্তরের মানুষ ওই শিক্ষকের বক্তব্যের কড়া প্রতিবাদ ও তার বিচার দাবি করেন।পরে এ বিষয়ে হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার এমপি দৈনিক কালজয়ীকে বলেন,ওই শিক্ষক (আবদুল লতিফ) রাজাকারের উত্তরসূরি।
সরাসরি চ্যালেঞ্জ করার পর এখন পর্যন্ত তিনি বক্তব্যের সপক্ষে কোনো প্রমাণ নিয়ে আসেননি।তাকে শোকজ করতে বলেছি।তার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠনে অধ্যক্ষকে অনুরোধ করেছি।ইতিহাস বিকৃতির ঘটনায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।তার এ বক্তব্য গোটা মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে।তিনি সব মুক্তিযোদ্ধাকে অপমান করেছেন।
জানা গেছে,আবদুল লতিফ জাতীয় শোক দিবসের পূর্বনির্ধারিত কোনো আলোচক ছিলেন না।তাকে অনুষ্ঠানে যোগদানের ব্যবস্থা করেন অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবু জাফর খান।এ বিষয়ে অধ্যক্ষ বলেন,আবদুল লতিফ ভূইয়াকে সোমবার কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে।আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তাকে নোটিসের জবাব দিতে হবে।তার বক্তব্য সন্তোষজনক না হলে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।