দেবীদ্বারে ছাগল চুরির অভিযোগে ২০২২ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্য়ন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, এতে আহত হয়েছেন অন্ত: ১৮জন, আহতদের মধ্যে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১ জন ও দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বাকীরা চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। পুলিশ বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ছাগল মালিকসহ দু’পক্ষের ২ জনকে গ্রেফতার করে কোর্ট হাজতে চালান করেছে পুলিশ, মামলা আতঙ্কে বিবাদমান দু’পক্ষের বাড়ি-ঘরে পুরুষ শূণ্য, এলাকায় আতঙ্ক ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ঘটনাটি ঘটে দেবীদ্বার উপজেলার জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের খয়রাবাদ গ্রামে। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর শনিবার সন্ধ্যায় খয়রাবাদ গ্রামের দক্ষিণপাড়ার মৃত আব্দুর রশিদের পুত্র আল আমিনের ভাগিনা ফাহিমরাজ (১২) নামে এক কিশোর একই গ্রামের মধ্যপাড়ার সরকার বাড়ির মৃত; আব্দুল মান্নান সরকারের পুত্র জালাল সরকার(৪৫)’র একটি ছাগল চুরির অভিযোগে ওই দফায় দফায় সংঘষের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর শনিবার মধ্যপাড়া সরকার বাড়ির মৃত; ওয়াহেদ আলী সরকারের পুত্র জালাল সরকারের একটি ছাগল বাড়ির পাশের একটি খামারে ঘাস খেতে খোটা দিয়ে রাখেন। ওই দিন সন্ধ্যায় খয়রাবাদ গ্রামের দক্ষিণ পাড়ার আল আমিনের ভাগিনা ফাহিম রাজ(১৪) তার মামার ছাগলের সাথে জালাল সরকারের ছাগলটিও মুখ বেঁধে নিয়ে যাচ্ছিল। এসময় জালাল সরকারের স্ত্রী তা দেখে ফেলেন। ছাগলটি আনতে গেলে ফাহিমরাজ তাদের ছাগল দাবী করে এবং গালমন্দ করে ছাগল নিয়ে যেতে চায়। এসময় জালাল সরকারের স্ত্রী ছাগলটি কেড়ে রেখে দেন এবং ওই রাতেই তার স্বামী জালাল সরকার(৪৫), পুত্র জাহিদুল ইসলাম (১৭) ও বাড়ির আরো দু’জনসহ ৫ জন ঘটনার বিচার চাইতে আল-আমিনদের বাড়িতে যান। ছাগল চুরির বিষয়য়ে কথা বলতে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও মারামারি হয়। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের ১০/১২জন আহত হয়।
ঘটনার রেশ ধরে পরদিন রোববার অর্থাৎ চলতি বছরের ১ জানুয়ারী সকালে জালাল সরকারের বাড়ির শাহজাহানের পুত্র নাজিম(১৮) পাশর্^বর্তী বামনিসার গ্রামে বিকাশে টাকা পাঠাতে গেলে- মৃত: আব্দুর রশিদের পুত্র আল-আমিন, রুহুল আমিন লিটন ও আনিস এবং ভাগিনা ফাহিমরাজ, চান মিয়ার পুত্র সাহাবুদ্দিন (৩৬), মাসুম মিয়ার পুত্র জাহের (৪৫)সহ কয়েকজন মিলে নাজিম উদ্দিকে বেধরক মারধর করে তার বিকাশের বিশ হাজার টাকা নিয়ে যায়।
গত মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারী) দুপুরে খয়রাবাদ গ্রামের মধ্যপাড়ার জালালদের পাশের বাড়ির মাওলানা মোঃ সহিদুল্লার পুত্র প্রবাসী ফারহান(২২) ধান চুড়াতে পাশের গ্রাম বামনিসার গেলে আল-আমিনদের বাড়ির আবু তাহের(একাশি)’র পুত্র আনোয়ার(২২), সামসুল হকের পুত্র জাহের(৪৫) চানু মিয়ার পুত্র সাহাবুদ্দিন(৪৫)’র নেতৃত্বে ২০/২৫ জন লাঠিসোটা নিয়ে বেধরক মারধরই নয়, হাতুরি দিয়ে তার হাতের আঙ্গুল থেতলে দেয়। তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
একই দিন বিকেেেল মৃত আব্দুর রশিদ এর পুত্র আল-আমিন, আনিস, রুহুল আমিন লিটন, তাদের বাড়ির কেরামত আলীর পুত্র মজিবুর রহমান হক্কা (৫৫)সহ ৪ জন মিলে জাফরগঞ্জ বাজারে যাওয়ার পথে জালালদের বাড়ির শাহজাহান মিয়ার পুত্র নাজমুল (২৪), জনুমিয়ার পুত্র দেলোয়ার (১৮), হারুন মিয়ার পুত্র আল- আমিন (১৮), ছিদ্দিকুর রহমানের পুত্র হারুন(৬০)সহ তাদের বাড়ির ২৫/৩০ জন লোক আল-আমিনদের উপর হামলা চালায়। ওই ঘটনায় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে ছাগল মালিক জালাল সরকার ও প্রতিপক্ষের মৃত ওয়াহেদ আলীর পুত্র জাকির হোসেনকে আটক করে বুধবার (৪ জানুয়ারী) দুপুরে কোর্ট হাজতে চালান করে।
দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর জানান, খয়রাবাদ গ্রামে ছাগল চুরির অভিযোগে দফায় দফায় সংঘর্ষ হচ্ছিল। সংঘর্ষ চলাকালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে দু’পক্ষের দুজনকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসি। কোন পক্ষই মামলা না করায় এলাকার শান্তি শৃংখলা রক্ষায় পুলিশ বাদী হয়ে গ্রেফতারকৃত দু’জনকে আসামী করে কোট হাজতে চালান করেছি।