কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে জমি-জমা সংক্রানমশ শালিশ শেষে বাদি পক্ষের লোকজনের ছুরিকাঘাতে বিবাদিপক্ষের দুই ভাই গুাংতর আহত হয়। ঘটনার ৩ দিন পর রোববার ভোরে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মধ্যে জাহাঙ্গীর আলম নামে আহত এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ওই এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান , প্রায় ২০ একর জমি নিয়ে মামলা মোকদ্দমা হয় ৪৭ বছর আগে। বর্তমানে মামলাটি হাইকোর্টে চলমান, এর পরও পুনরায় কয়েকদিন আগে দৌলতপুর উপজেলার আদাবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর অত্র ইউপির ৭ নং ওয়ার্ডের মৃত জফের শাহ্ এর পুত্র মনিরুল ইসলাম (৪৫) বাদি হয়ে আবেদন করেন মিমাংসা চেয়ে।
মামলাটি হাইকোর্টে চলমান আছে জেনেও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাকি ওরফে বাকি কাজি মিমাংশার জন্য উভয় পক্ষকে ডেকে নিয়ে এসে তার কার্যালয়ে গত বুধবার দুপুরে এজলাসে বসে। এদিকে সালিসকে কেন্দ্র করে বাদিপক্ষের লোকজন লাঠিসোডা নিয়ে সুসজ্জিত দেখে বিসৃংক্ষলা হতে পারে ভেবে বিবাদিগণ চেয়ারম্যান বাকি-কে মিমাংসার জন্য বসতে নিষেধ করার পরও বিবাদীদের সালিসে বসতে বাধ্য করান।
এক পর্যায়ে বাদি-বিবাদীর বাকবিতন্ডায় সালিশ বন্ধ করে দেন চেয়ারম্যান। উভয় পক্ষের লোকজন ইউপি কার্যালয় ত্যাগকালে বাদি পক্ষের লোকজন বিবাদি পক্ষের লোকজনের উপর হামলা চালায়। এতে বাদী পক্ষের ছুরিকাঘাতে মোঃ রুহুল আমিন এর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৪০)-কে পেটে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। জাহাঙ্গীর আলম এর চাচাত ভাই জাহাঙ্গীরকে রক্তাক্ত দেখে ছুটে গেলে মৃত গোলাম রহমান এর ছেলে লিপ্টন হোসেন তোতা (সাবেক মেম্বর) কেও ছুরি দিয়ে আঘাত করলে মাটিতে পড়ে যায় তার পরও লাঠি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে রক্তাক্ত করে।
আহতদের দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হলে পরে আশংকাজনক দেখে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, সেখানেও তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য গতকাল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত জাহাঙ্গীর আলম রোববার ভোর সাড়ে় তিনটার দিকে তার মৃত্যু হয়। নিহত জাহাঙ্গীর আলমের বাবা রুহুল আমিন জানান প্রায় ২০ একর জমি আমাদেরই ভোগদখলে, বাদিগনের দেয়া মামলা প্রায় ৪৭ বছর চলছে হাইকোর্টে। এর পরও বাদিগন পুনরায় ইউপি চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করলে শালিশি বৈঠক বসায় পরিষদে গত বুধবার, বাকবিতন্ডা দেখে শালিশ বন্ধ করে চেয়ারম্যান।
বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলে পরিষদের সামনে অতর্কিত হামলা করলে আমার ছেলে জাহাঙ্গীর ও ভাতিজাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করলে গুরুতর আহত হয়। দ্রুত চিকিৎসার জন্য দৌলতপুর হাসপাতালে ভর্তি করলে আশংকাজনক দেখে চিকিৎসক কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল এবং শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে আর সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আমার ছেলে মৃত্যু বারণ করে। এ ঘটনায় আমি বৃহস্পতিবার দৌলতপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছিলাম । এদিকে আহত তোতা জানান, আমরা চেয়ারম্যানকে শালিশে না বসার অনুরোধ করেছিলাম, কারন বাইরে বাদিগনের লোকজন অস্ত্র নিয়ে আনাগুনা করছিলো। তারপরও চেয়ারম্যান জোর পুর্বক শালিশে বসায়।
আমার ধারনা চেয়ারম্যানের চেয়ারম্যানের ইশারাতে আমাদের উপর হামলা চালায়। এদিকে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাকি-কে মুঠো ফোনে কথা বলতে চাইলে এ ব্যাপারে তিনি কথা বলবেন না বলে জানান। দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম জাবীদ হাসান জানান জমি-জমা সংক্রান্তের জেরে ছুরিকাঘাতে দুজন আহত হয়। তাদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জাহাঙ্গীর আলম ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন । বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।