ওমান প্রবাসী এক তরুণকে চাপে ফেলে বিয়ে করতে ওই প্রবাসীর ২২ মাস বয়সী ভাতিজাকে কৌশলে অপহরণ করান পাত্রী। কিন্তু তার উদ্দেশ্য সফল হয়নি। পুলিশ অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করেছে পাত্রী রুহেনা আক্তার রিয়াকে (২১)। ঘটনাটি ঘটেছে মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলায়।
পুলিশ জানিয়েছে, উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের কেশরপাড়া গ্রামের প্রবাসী জুবেল আহমদের সাথে বিয়ের কথাবার্তা চলছিল সিলেটের ওসমানীনগর থানার পশ্চিম রুকনপুর গ্রামের মৃত কনাই মিয়ার মেয়ে রুহেনা আক্তার রিয়ার। কিন্তু অভিভাবকদের সমঝোতা না হওয়ায় তাদের বিয়ের আলোচনা আর সামনে এগোয়নি।
এ পর্যায়ে, প্রবাসী জুবেল আহমদকে বিয়ে করতে এই কৌশল নেন রিয়া। তিনি পরিচিত কয়েকজনের সহযোগিতায় বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে জুবেলের ভাতিজা ২২ মাস বয়েসী শিশু সাইফকে কৌশলে অপহরণ করান। রাজনগর পুলিশকে শিশুটির অভিভাবকরা অপহরণের ব্যাপারে জানালে, পুলিশ অপহরণকারীদের ফোন নম্বর, সর্বশেষ কল আদান-প্রদানের রেকর্ড ও লোকেশন ট্র্যাক করে শনিবার (৪ ডিসেম্বর) শিশুটিকে উদ্ধার করে। ঘটনায় মূল আসামি হিসেবে ওই তরুণীকে গ্রেফতার করা হয়।
মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. জিয়াউর রহমান জানান, গত বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে জুবেলের ভাই প্রবাসী জায়েদের বন্ধু পরিচয়ে জুবেলের আরেক ভাই জাবেদ আহমদের বাড়িতে যান দুই অজ্ঞাত যুবক। চা-নাস্তা খাওয়ার পর জাবেদ আহমদের শিশুপুত্র সাইফকে কোলে নিয়ে মোবাইল রিচার্জ করার কথা বলে বের হন তারা। পরে তাদের ব্যবহৃত প্রাইভেটকারে শিশুটিকে নিয়ে পালিয়ে যান। কয়েক ঘন্টা পর শিশুর দাদির মোবাইল ফোনে কল করে জানানো হয়, শিশুটিকে ফিরে পেতে হলে ওই তরুণীর সাথে জুবেলের বিয়ে দিতে হবে।
পুলিশের কাছে অভিযোগ করলে, প্রথমে অপহরণকারীদের ফোন নম্বর, অবস্থন এবং তারা অপহরণের পর কখন কার সাথে যোগাযোগ করছে তা নিয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে পাওয়া যায়, এই অপহরণ নাটকের মূল হোতা রিয়ার খোঁজ। রোজ শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেলে সিলেটের ওসমানীনগর থানার তাজপুর বাজারের কদমতলী এলাকা থেকে শিশুটিকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় রিয়াকে। পালিয়ে গেছে তার অপর দুই সহযোগী। পুলিশ জানিয়েছে তাদেরকে গ্রেফতারের উদ্দেশে অভিযান চলছে। এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে রাজনগর থানায় মামলা হয়েছে।