চায়ের রাজধানী খ্যাত, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ব্যবসা-বাণিজ্য ও পর্যটন শহড় সমৃদ্ধ হলো মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল পৌরসভা। ১৯৩৫ সালে মাত্র এক বর্গমাইল এলাকাজুড়ে প্রতিষ্ঠিত হয় এ শ্রীমঙ্গল পৌরসভাটি। বর্তমানে প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা হিসেবে তালিকাভুক্ত। মুলত এই পৌরসভাটি স্থাপনের আগে যে আরবান এলাকা হিসেবে প্রতিস্থাপিত হতে হয়। বিট্রিশ সরকার কর্তৃক চা বাগান স্থাপনের ফলে এবং মারোয়ারীরা শ্রীমঙ্গলে আরদারি ব্যবসা শুরু করায় ক্রমশ এটি উন্নত এবং ব্যস্ত এলাকায় রুপ ধারণ করে। পাশাপাশি তৎকালিন সময়ে থানা ছিল মতিগঞ্জ। মতিগঞ্জ থেকে থানা ক্যাম্পাস স্থানান্তরিত হয় শ্রীমঙ্গলে। এ সব কারনে তৎকালীন আসাম সরকার এটিকে পৌরসভা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। শ্রীমঙ্গলের পৌরসভার প্রথম চেয়ারম্যান ছিলেন তৎকালীণ এসডিও গিরিজা শংকর গুহ। যার নামে পৌরসভার পাশে বর্তমান গুহ রোডটি এর স্মৃতি চারণ করে। প্রশাসক থেকে যখন নির্বাচন শুরু হয় সে নির্বাচনের ধারাবাহিকতায় বার বার নির্বাচিত চেয়ারম্যান মহসীন মিয়া (মধু) বর্তমানে পৌর পিতার আসনে থেকে পৌরসভার উন্নয়ন সাধন করে চলেছেন। যার বর্তমান ভোটার সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার।
বর্তমান মেয়র মহসীন মিয়া (মধু) বিগত পৌর নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেন। এর আগেও আরো দুই মেয়াদে ১০ বছর পৌর পিতার আসনে দায়িত্ব পালনে ছিলেন।
তিনি জানান, প্রথম মেয়াদে দায়িত্ব নেয়ার পর অনেক টাকা ঋণ ছিলো। কিন্তু তিনি তার মেয়াদ অতিক্রমকালে সকল ঋণ পরিশোধসহ নানাবিদ উন্নয়ন করার পরও ৭০ লক্ষ টাকা উদ্বৃত রেখে যান। পরবর্তী মেয়াদে তিনি যখন আবারও দায়িত্ব ভাড়নেন তখনও ঋণ ছিলো। বর্তমানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শহড়ের উন্নয়নের পরও কোন ঋণ নেই। তিনি জানান, তার মেয়াদকালে তিনি যে সকল উন্নয়ন করেছেন এর ফলে এটি একটি মডেল পৌরসভায় রুপ নিয়েছে। তার সময়ে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক উন্নয়নের মধ্যে পৌরসভার মহসিন অডিটরিয়াম কাম কমিউনিটি সেন্টার নির্মান, পৌরসভা ভবন আধুনিকায়ন ও পৌরসভার সীমানা প্রাচীরের সৌন্দর্য বর্ধন কাজ, জনসাধারনের চলাচলের জন্য বিভিন্ন প্রধান প্রধান সড়কের পাশে ফুটপাত নির্মান, যানজট নিরসনের জন্য পৌর এলাকায় কলেজরোড, গুহরোড, জালালিয়া রোড, সিন্দুরখান রোড, শাপলাবাগ রোড, কালিঘাট রোডসহ অন্যান্য রাস্তা প্রশস্থ করেন। কর্মসংস্থান ও পৌরসভার আয় বর্ধনের লক্ষ্যে পোষ্ট অফিস রোডে সাইফুর রহমান মার্কেট নির্মাণ, ষ্টেশন রোডে মার্কেট নির্মান করেন। সাগরদীঘি পাড়ে পাইকারি মাছের শেড নির্মান। বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের লক্ষ্যে পাম্প ও বিভিন্ন রাস্তায় পাইপ লাইন স্থাপন করেন। পৌর এলাকার ছোট বড় প্রতিটি রাস্তায় বৈদ্যুতিক সড়ক বাতি স্থাপন তার অন্যতম আরেকটি উন্নয়ন। পাশাপাশি পৌর এলাকার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠির মেয়েদের স্বাবলম্বী ও সুশিক্ষিত করার লক্ষ্যে কিশোরী ক্লাব গঠন করে দেয়া, এবং বিভিন্ন প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কম্পিউটার প্রশিক্ষন, ইংলিশ স্পোকেন শিক্ষা, বিউটি পার্লার, সংগীত প্রশিক্ষণ, নৃত্য ও আবৃত্তির প্রশিক্ষন প্রদান প্রবৃতি । এ ছাড়াও পৌর এলাকার সকল কবরস্থানের উন্নয়ন কাজসহ বিশেষ বরাদ্দের মাধ্যমে পৌর এলাকার বিভিন্ন মসজিদ, মন্দির ও শশ্মানঘাটের উন্নয়ন সাধন করেছেন। তিনি জানান, যেহেতু এটি একটি পর্যটন নগরী সে কারনে পৌরসভার সৌন্দর্য বর্ধনের লক্ষ্যে পৌর এলাকায় বিভিন্ন স্থানে স্কার্পাচার নির্মান। পৌরসভার সৌন্দর্য বর্ধনের লক্ষ্যে ডাক বাংলা পুকুরপাড়ে টেরাকোটা নির্মান। পৌর এলাকার ষ্টেশন রোড, নতুনবাজার ও সাগরদিঘীপাড়ে গণশৌচাগার নির্মান। জনসাধারনের গোসলের লক্ষ্যে ডাক বাংলা পুকুরপাড়ে ২টি ঘাট নির্মান করেন। এ ছাড়াও তার পূর্বের মেয়াদে তিনি শ্রীমঙ্গলে দ্বিতল কাঁচা বাজার নির্মান করেন। তিনি জানান, কাজের ধারাবাহিকতায় আগামীর পরিকল্পনা ও বেশ কিছু প্রকল্প জমা রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো পৌর এলাকার ময়লা আর্বজনা ফেলার ডাম্পিং ষ্টেশন স্থাপন, পৌর এলাকার জনগনের জন্য বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের লক্ষ্যে ওয়াটার ট্রীটম্যান্ট প্লান্ট তৈরী। পৌরসভার জলাবদ্ধতা দুরিকরনের লক্ষ্যে দুটি ছড়া খনন। পৌর এলাকা দৃষ্টি নন্দন করার লক্ষ্যে বিভিন্ন সৌন্দর্য বর্ধন কাজ, পরিচ্ছন্ন কর্মীদের জন্য আধুনিক আবাসন নির্মান, বাস ষ্ট্যান্ড নির্মান। পৌর এলাকায় আরো পাবলিক টয়লেট নির্মান, বিনোদনের লক্ষ্যে পার্ক নির্মান, পাবলিক লাইব্রেরী পুন:স্থাপন, সুপেয় পানি সরবরাহের লক্ষ্যে ওভারহেট টাংকী নির্মান, ভেজিটেবল এগ্রিকালচার শেড নির্মানসহ পৌর এলাকা দ্রুত সম্প্রসারন করে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করার পরিকল্পনা গ্রহন করেছেন। তিনি আরো ও জানান, আমার চেয়ারম্যানের মেয়াদকালে ব্যবসায়ীদের কোন রকম সন্ত্রাসী হামলা ও চাঁদা বাজীদের কোন রকম উপদ্রুবের কোন নজীর নেই। পৌর এলাকার জনগণের শান্তি প্রিয় জনগনের জানমালের নিরাপত্তার জন্য সব সময় সচেষ্ট ভূমিকায় সর্বাত্মক চেষ্টা ও জনগণের সহযোগিতায় এগিয়ে যেতে সাহস যোগিয়েছে।
তিনি জানান, একি সাথে পৌর এলাকার হতদরিদ্র ও অসহায় মানুষের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে আরো বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজ বাস্তবায়নেরও পরিকলনা গ্রহন করেছেন। নিজেকে দুর্নীতি মুক্ত রেখে নিষ্ঠার সাথে জনগণের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তার মধ্যে ও যদি কোন প্রকার ভূল ভ্রান্তির অবকাশ থেকে থাকে সে সব ভুলের সংশোধন করেই আগামীতে জনগনের রায়ের প্রতিফলনে তিনি নির্বাচিত হলে সচ্ছতা ও নিষ্ঠার সহিত তার নিজ দায়িত্ব পালন করে অসমাপ্ত কাজ ও জনগনের পাশে থাকবেন এবং দূর্নীতি, অনিয়মের বিরুদ্ধে কাজ করে যাবেন সব সময় এটাই হবে মুল প্রতিবাদ্য বিষয়ে জনগণের আস্থার প্রতিফলন ঘটাতে আমি বদ্ধপরিকর।