চাঁদপুরে নিজ পুত্রবধূর মারধরের শিকার হয়ে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালের বেডে চিকিৎসা নিচ্ছেন জাহানারা বেগম (৭৬) নামের এক বৃদ্ধা শাশুড়ি। ৮ মে সোমবার সকাল ৭টায় চাঁদপুর সদর উপজেলার ৫নং রামপুর ইউনিয়নের চরবাকিলা গ্রামের খান বাড়িতে এই মারধরের ঘটনা ঘটে।
আহত বৃদ্ধা শাশুড়ি ওই বাড়ির মৃত আব্দুর রশিদ খানের স্ত্রী।
আহত বৃদ্ধা জাহানারা বেগম জানান, প্রায় সাত বছর পূর্বে তার ছেলে হাবিব খানের সাথে চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী চৌরাস্তা এলাকার কলমতর গাজী বাড়ির বারেক গাজীর মেয়ে নাসরিন আক্তার প্রেমের সম্পর্ক করে তার ছেলেকে বিয়ে করেন। বিয়ের কয়েক মাস যেতেই তারা স্বামী স্ত্রী পারিবারিক বিষয় নিয়ে অনেক ঝগড়াঝাটি হলেই বেশ কয়েকবার নাসরিন আক্তার তার বাপের বাড়িতে চলে যেতেন। এমনকি এসব বিষয় নিয়ে গত কয়েক বছর পূর্বে নাসরিন আক্তার আদালতে একটি মামলা দিয়ে তার স্বামী হাবিব খানকে জেলও খাটিয়েছেন বলে জানান তিনি। স্ত্রীর দেয়া মামলায় হাবিব খান বেশ কিছুদিন জেল খেটে জামিনে বের হয়ে বিদেশে চলে যান। তারপর থেকেই বৃদ্ধার পুত্রবধূ নাসরিন আক্তার তার শাশুড়ির সাথে প্রায় সময় খারাপ আচরণ এবং মারধরের ঘটনা ঘটাতে থাকেন।
ঘটনার দিন সকাল ৭টার দিকে পুত্রবধূ নাসরিন আক্তার তার শাশুড়িকে রান্না ঘরে না ঢুকার জন্য ভারন করেন এবং ডাব ব্যবসায়ীদের ডেকে বাড়ির গাছে থাকা সমস্ত ডাব বিক্রি করার জন্য শাশুড়িকে শাসাতে থাকেন।
আর এসব বিষয় নিয়ে তাদের বউ শাশুড়ির ঝগড়া এবং কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে পুত্রবধূ নাসরিন আক্তার বৃদ্ধা শাশুড়ির ঘরে ঢুকে তাকে কিল, লাথি ঘুষিসহ খাটের পায়ার সাথে মাথা ঠুকরিয়ে মারতে থাকেন। নিজ পুত্রবধূর এমন মারধরের শিকার হয়ে বৃদ্ধা শাশুড়ি গুরুতর আহত হয়ে পড়লে বাড়ির অন্যান্য লোকজন তাকে চিকিৎসার জন্য চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। বর্তমানে তিনি হাসপাতালের চতুর্থ তলার মহিলা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। শাশুড়ির প্রতি এমন অত্যাচার ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলে নাসরিন আক্তার তাদেরকেও মামলায় জড়িয়ে দেন এবং মামলার ভয়ভীতি দেখান।
আহত বৃদ্ধা শাশুড়ি আরো জানান, তার ছেলে হাবিব খানকে বিয়ে করার পূর্বেও নাসরিন আক্তারের আরেকটি বিয়ে হয়েছিল। সেখানেও সে একইভাবে স্বামীর সাথে ঝগড়াঝাটি করে মামলা দিয়ে টাকা পয়সা নিয়ে চলে আসেন। তারপর ২য় বার প্রেমের জালে আটকিয়ে তার ছেলে হাবিব খানকে বিয়ে করেন। পুত্রবধূর এমন শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন থেকে রেহাই পেতে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছেন ভুক্তভোগী অসহায় বৃদ্ধা জাহানারা বেগম।
এ বিষয়ে বক্তব্য নেয়ার জন্য অভিযুক্ত নাসরিন আক্তারের সাথে তার ব্যবহৃত নম্বরে একাধিক যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।