চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন স্থানে খোলামেলা রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে করোনায় আক্রান্ত রোগী এবং আক্রান্ত পরিবারের সদস্যরা। বিশেষ করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা করোনায় আক্রান্ত অনেক রোগী হাসপাতাল এলাকায় চলাফেরা করতে দেখা যায়। মহামারি করোনা ভাইরাস একটি ছোঁয়াচে রোগ হওয়ায়। এর ফলে চাঁদপুরে লাফিয়ে বাড়ছে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। খবর নিয়ে জানা গেছে, চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল এলাকায় আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি কৃত করোনায় আক্রান্ত অনেক রোগী এবং রোগীর সাথে থাকা স্বজনরা বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিস -পত্র ক্রয় করতে কিংবা মসজিদে নামাজ পড়তে ওয়ার্ড থেকে প্রতিনিয়ত বের হচ্ছেন। এই বের হওয়ার সুযোগে তারা নিরবেই সাধারন মানুষের সাথে মিশে যাচ্ছেন। করোনায় আক্রান্ত রোগী এবং রোগীর স্বজনদের মাঝে সচেতনতা না থাকায় সাধারণ মানুষ নিজেদের অজান্তেই তাদের সংস্পর্শে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন।
সদর হাসপাতাল এলাকায় করোনা আক্রান্ত রোগীদের এমন খোলামেলা চলাফেরা নিয়ে চাঁদপুর কালেক্টরেট জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মোশারফ হুসাইন চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তার ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট করেন।তিনি ওই পোস্টে উল্লখ্য করেন, চাঁদপুর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে বর্তমানে ১৫০ এর অধিক করোনা প্রজেটিভ রোগী ভর্তি রয়েছেন। আজও কয়েকজন রোগী মৃত্যু বরণ করেন। করোনা প্রজেটিভ রোগীদের সকল ব্যবস্থা হাসপাতালে থাকা সত্ত্বেও অনেক রোগীকে অনায়েশে রাস্তায় ঘুরাফেরা করতে দেখায় যায়। এমনকি মসজিদে এসে নামাজ আদায় করেন। ইসলামী বিধান অনুযায়ী তাদের এ নামাজ কতোটুকু শুদ্ধহবে তা আমার জানা নেই। তবে এতোটুকু বলতে পারি যে নামাজ অন্যেদের জন্য মৃত্যুর কারণ হয়ে যায় সে নামাজ আল্লহর দরবারে কবুল হওয়ার আশা করা যায় না।
তবে আল্লাহ কবুল করার মালিক। জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সদয় দৃষ্টি কামনা করছি যে, দু,তলা,তিন তলা এমনকি চুতর্থ তলায়ও করোনা প্রজেটিভ রোগী ভর্তি রয়েছেন। তাই তারা যেন বের হতে না পারে সে ব্যাপারে গার্ডের ব্যবস্থা করলে চাঁদপুরের জনসাধারণের জন্য মুক্তির পথ হবে। আর প্রতিটি রোগীর সাথে একজন ব্যতীত কাউকে করোনা প্রজেটিভ রোগীর কাছে যেতে না দেয়ার আইন করা একান্ত প্রয়োজন। বিশেষ করে চাঁদপুর শহরের মধ্যে কালেক্টরেট জামে মসজিদটি করোনা প্রজেটিভ রোগীর কারণে হুমকির মুখে রয়েছে। এবং সাধারণ মুসল্লি এখানে নামাজ পড়তে অনিহা বোধ করছে। তাই এহন সমস্যার সমাধান করার জন্য মান্যবর জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সদয় দৃষ্টি কামনা করছি।
এদিকে গত দু’দিন ধরে চাঁদপুরে ব্যাপকহারে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। খবর নিয়ে জানা গেছে শনিবার সারাদিনে চাঁদপুর সহকারি জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ৭ জন ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেছেন। এছাড়া গত শুক্রবার সারাদিনে ১৮৯ স্যাম্পলের মধ্যে ১০৫, জন করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ছিলো ৫৫.৫৫%। ইতিমধ্যে সরকারি এই হাসপাতালটির দ্বিতীয় তলার আইসোলেশন ওয়ার্ড ছাড়িয়ে তৃতীয় তলাকেও আইসোলেশন ওয়ার্ডের আওতায় আনা হয়েছে। গত দু’দিন ধরে খবর নিয়ে জানা গেছে হাসপাতালের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় তলার আইসোলেশন ওয়ার্ড ছাড়িয়ে বারান্দায় এবং করিডোরে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসকদের মতামত সাধারণ মানুষের মাঝে জনসচেতনতা বৃদ্ধি না হলে চাঁদপুরে করোনার ভয়াবহতা কোন পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়ায় তা বলা মুশকিল।