1. bpdemon@gmail.com : Daily Kaljoyi : Daily Kaljoyi
  2. ratulmizan085@gmail.com : Daily Kaljoyi : Daily Kaljoyi
চাঁদপুরে একদিনের টানা বৃষ্টিতে আলু চাষের ব্যাপক ক্ষতি
বাংলাদেশ । বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

চাঁদপুরে একদিনের টানা বৃষ্টিতে আলু চাষের ব্যাপক ক্ষতি

কবির হোসেন মিজি :
  • প্রকাশিত: শনিবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
  • ২৮৫ বার পড়েছে

চাঁদপুরে হঠাৎ একদিনের টানা বৃষ্টিতে চাষকৃত আলুর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি দেখা দিয়েছে। চাষকৃত ক্ষেতে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় কৃষকদের মাথায় হাত। যেখানে লাভের আশায় কৃষকরা আলু চাষ করেছেন। অসময়ে হঠাৎ এমন বৃষ্টির কারনে এখন লাভের বোঝা টানতে হবে এমনটাই আশংকা চাষিদের।

জানাযায় গত ৪ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার দুপুরে থেকে গভীর রাত পর্যন্ত থেকে, থেকে কয়েক ঘন্টার বৃষ্টিপাত হয়। বৃষ্টির পানিতে অধিকাংশ জমির বীজ তলায় পানি জমে গেছে। এতে বড় ধরনের ক্ষতির আসংখ্যায় দুশ্চিন্তা বেড়েছে আলু চাষিদের মাঝে । এছাড়া নিচু জমির শাকসবজি সহ অন্যান্য ফসলেরও ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। তবে বৃষ্টির পানিতে চাষকৃত আলুরই বেশি ক্ষতি হয়েছে।

৫ ফেব্রুয়ারি রোববার সকালে চাঁদপুর সদর উপজেলার মৈশাদী, বাবুরহাট, কালী ভাংতি, মুন্সিরহাট, পালকান্দি, গাছতলা, আশিকাটি, ৪নং শাহমামুদপুর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামে ঘুরে দেখা গেছে কৃষকদের চাষকৃত আলু ক্ষেতে বৃষ্টির পানি জমে আছে। যার ফলে আলু পঁচে যাওয়া, দাউদ দাগ পড়া এবং সাইজে বড় না হওয়াসহ নানা ক্ষতির আশংকা। শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডস্থ কৃষ্ণপুর গ্রামের কৃষক খোকন গাজী জানান, ওই গ্রামে তিনি ১১২ শতাংশ জমিতে আলু, ধুন্দুল করলা রোপন করেন। প্রায় দু,মাস পূর্বে আলুর বীজ রোপন করেছেন। যা বর্তমানে আলু গাছের বয়স ৫৫ থেকে ৬০ দিন হবে। ৯০ দিন পরে এই আলু উঠানোর কথা। একই গ্রামের কালাম গাজীর ৩০ শতাংস মিজান গাজীর ৬০ শতায়স, বিল্লাল গাজী,র ১০০ শতাংস, জমিতে এবছর আলু চাষ করেছেন বলে তারা জানান।

উল্লেখ্যিত কৃষকরা সহ আরো প্রায় ৩০ /৪০ জন কৃষক জানান, হঠাৎ একদিনের এমন টানা বৃষ্টিতে, আবাদ করা ক্ষেতে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় চাষকৃত আলুতে দাউদ দাগ পড়বে, আলু পঁচে যাবে, আলু গাছ মরে যাবে। আর গাছ না বাড়লে আলু সাইজে বড় হওয়ারও কোন সম্ভাবনা নেই।

তারা জানান, ২ মাসে পূর্বে আলু রোপন করার পর ঘূর্ণিঝড় হয়েছিলো। তখনো তাদের চাষের জমিতে আলুর বীজ, স্যার বদলা খরচ, হালের খরচ সহ লোকসান হয়েছে। তখন তারা পুনারায় এসব খরচ করে অনেক আশা নিয়ে আলু চাষ করেছিলেন। ভুক্তভোগী কৃষকরা জানান, গত ৩০ নভেম্বর তারা ১১২ শতক জমিতে আলুর আবাদ করেছিলেন। এরপর ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে ঘুর্ণিঝড়ে আলুর বিজতলা পানিতে তলিয়ে যায়। এরপর ধার-দেনা করে পুনরায় আলু বিজ লাগান। কিন্তু শুক্রবারের হঠাৎ বৃষ্টিতে আলুর বিজতলায় পানি জমে গেছে। এমনিতে আলুর দাম কম, তারপর হঠাৎ বৃষ্টিতে আলুর বিজতলার ক্ষতি হলো। এই ক্ষতি তারা পুষিয়ে উঠতে পারবো কি না তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। এভাবে দু-তিনদিন আলু পানিতে ডুবে থাকলে সব আলু নষ্ট হয়ে যাবে। এতে করে বিপুল ক্ষতিতে পড়তে হবে তাদের।

একই ইউনিয়নের পাশের গ্রামের কৃষক আবুল কালাম বলেন, লাভ-লোকসান যা-ই হোক আলুর আবাদ তাদের প্রধান ফসল। গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবারও তিনি ৩৩ শতক জমিতে আলুর আবাদ করেছেন। আর কয়েক দিন পর আলু উত্তোলন করার কথা। কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টির কারনে বেকায়দায় পড়েছে তারা। এদিকে চাঁদপুর কৃষি অফিস সূত্র থেকে জানা যায়, চলতি ২০২১-২২ অর্থ বছরের রবি মৌসুমে চাঁদপুরে আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৯ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে বিজতলায় পানি জমে থাকায় আবাদ হয়েছে ৭ হাজার ১৪০ হেক্টর জমিতে।

এ বিষয়ে চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ নরেশ চন্দ্র দাস জানান, ২০২১-২২ অর্থ বছরের রবি মৌসুমে আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৯ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমিতে। ইতিমধ্য ৭ হাজার ১শ’ ৪০ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। তবে ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি এবং ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে দুই দফায় বৃষ্টিপাতের কারনে আলু উৎপাদন কিছুটা বিঘ্ন হবার আসংখ্যা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পাশাপাশি অন্যান্য ফসলেরও কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। এ ব্যাপরে আমাদের মাঠ পর্যায়ের তথ্য সংগ্রহ চলছে। অচিরেই আমরা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাপ নির্ধারণ করবো এবং উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হবে।

তিনি আরো জানান, বর্তমান সরকার কৃষি বান্ধব। এই খাতে সরকার নানাভাবে কৃষকদেরকে সহযোগীতা করছে। বৃষ্টিতে কৃষকদের ক্ষতি পূষিয়ে দিতে কৃষি বিভাগের মাধ্যমে সরকারি কোন সহায়তা পেলে তা আমরা যথা সময়ে পৌঁছে দিবো। উল্লেখ: চাঁদপুরে সাড়ে ৯ হাজার হেক্টর জমিতে আলু উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ২ লাখ মে.টন এরমধ্যে চাঁদপুর সদরে ১ হাজার ৭শ’ হেক্টর এবং উৎপাদন ৩৫ হাজার ৮৮ মে.টন। মতলব উত্তরে ৬শ’ ২০ হেক্টর এবং উৎপাদন ১২ হাজার ৭শ’ ৯৭ মে.টন। মতলব দক্ষিণে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৩ হাজার ৭শ’ হেক্টর এবং উৎপাদন ৭৬ হাজার ৩শ’ ৬৮ মে.টন। হাজীগঞ্জে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৭শ’ ২০ হেক্টর এবং উৎপাদন ১৪ হাজার ৮শ’ ৬১ মে.টন। শাহরাস্তিতে চাষাবাদ লক্ষ্যমাত্রা ২০ হেক্টর এবং উৎপাদন ৪শ’ ১২ মে.টন। কচুয়ায় চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার ৫শ’ হেক্টর এবং উৎপাদন ৫১ হাজার ৬শ’ মে.টন। ফরিদগঞ্জে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৯০ হেক্টর এবং উৎপাদন ১ হাজার ৮শ’ ৫৭ মে.টন এবং হাইমচরে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ১শ’ ৫০ হেক্টর এবং উৎপাদন ৩ হাজার ৯৬ মে.টন। জেলা ১২ টি হিমাগারে ৭০ হাজার মে.টন আলু সংরক্ষণ করার ধারণ ক্ষমতা রয়েছে। বাকি আলু হিমাগারের বাহিরে থাকে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

Archive Calendar

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
প্রকাশক কর্তৃক জেম প্রিন্টিং এন্ড পাবলিকেশন্স, ৩৭৪/৩ ঝাউতলা থেকে প্রকাশিত এবং মুদ্রিত।
প্রযুক্তি সহায়তায় Hi-Tech IT BD