চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায় যুবতীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে মা-মেয়েকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়েছে।আহত খাদিজা বেগম (২৭) ও তার মাতা সুরাইয়া বেগম (৫০) গুরুতর আহত হয়ে গত দু’দিন ধরে বর্তমানে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
গত ২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৬নং গুপ্টি ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডস্থ ষোলদানা গ্রামের হাসান আলী বেপারী বাড়িতে এ ন্যাককার জনক হামলার ঘটনা ঘটে।অভিযুক্ত আসামীদের বিরুদ্ধে চাঁদপুর আদালতে মামলা করা হলেও তারা ভুক্তভোগীদের দফায় দফায় হামলা করে বিভিন্ন হুমকি দিয়ে দাপটের সাথে এলাকায় বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
আহত খাদিজা বেগম ও তার মাতা সুরাইয়া বেগম জানান,তারা একটি অসহায় পরিবার।তাদের সংসারে তেমন কোনো পুরুষ মানুষ না থাকায় তাদের অসহায় পেয়ে অভিযুক্তরা তাদেরকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করার জন্য প্রায় সময় বিভিন্ন ঝগড়া ঝাঁটি ও হামলা করে আসছেন।
আহত সুরাইয়া বেগম আরো জানান,জীবন-জীবিকার তাগিদে তারা পূর্ব থেকেই ঢাকা গাজীপুরে বসবাস করে আসছেন।কয়েক বছর পূর্বে তার স্বামী কয়েকবার স্ট্রোক করে প্যারালাইসিসের রোগী হয়ে অকর্মা হয়ে পড়েন।তারা বাড়িতে না থাকার সুযোগে একই বাড়ির মৃত আবু বেপারীর ছেলে সবুজ বেপারী ও বশির বেপারী,মিলে পৈত্রিক সম্পত্তি ভোগ দখল করার জন্য তাদেরকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করার পাঁয়তারা করে আসছেন।
তাদেরকে অসহায় পেয়ে এ নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে সবুজ গংরা বেশ কয়েকবার তাদেরকে মেরে আহত করেছেন।এমনকি সুরাইয়া বেগমের বড় মেয়ে খাদিজা আক্তারকে ধর্ষণ করে তাকে কলঙ্কিত করে তার জীবন নষ্ট করবে বলেও হুমকি দিয়ে প্রদান করেন।
বাড়ির এসব পৈত্রিক সম্পত্তির জের ধরেই অভিযুক্ত সবুজ,বশির,তাদের চাচা তাফাজ্জল বেপারী,ইব্রাহিম এবং ইদ্রিস সহ আরো বেশ কয়েজন মিলে গত ২৬ আগস্ট ও ৩১ আগস্ট দুই দফায় তাদের মা মেয়েকে এলোপাতাড়ি মেরে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।আর ওই ঘটনায় অসহায় সুরাইয়া বেগম বাদী হয়ে চাঁদপুর আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলা করার পর থেকেই সবুজ গংরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের ওপর হামলা করার জন্য ওত পেতে থাকেন।এদিকে ঘটনার দিন সকালে তারা মা মেয়ে ভয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় ওত পেতে থাকা সবুজ এবং বশির তাদের পথ গতিরোধ করে তাদেরকে টেনে হিঁচড়ে একটি ঘরে নিয়ে খাদিজাকে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা চালায় বলে তাদের অভিযোগ।
এসময় সবুজ তাদের ক্ষোভ মেটাতে খাদিজার গাঁয়ের পোষাক টেনে হিঁচড়ে তাকে বিবস্ত্র করে ফেলে এবং এলোপাতারি কিল, লাথি ঘুষি সহ দেয়ালের সাথে এলোপাতাড়ি ভাবে তার মাথায় আঘাত করেন।মেয়েকে বাঁচাতে তার মা সুরাইয়া বেগম এগিয়ে গেলে আসামীরা তাদের মা-মেয়ের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।
আহতরা জানান,এসময় তারা ব্যাংকে জমা দেওয়ার জন্য তাদের সাথে থাকা নগদ ৮০ হাজার টাকা এবং মা ও মেয়ের গলার স্বর্ণের চেইন ও কানের দুল ছিনিয়ে নিয়ে যায়।তারা প্রাণে বাঁচার জন্য ত্রিফল নাইনে পুলিশকে কল করলে তাদের দুটি মোবাইল ফোনও ভাঙচুর করে।ঘটনার পর ফরিদগঞ্জ থানার এস আই মহসিন ও এলাকার অন্যান্য লোকজন তাদেরকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে পাঠান।
বর্তমানে তারা মা মেয়ে দু,জনে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে।এ বিষয়ে অভিযুক্ত সবুজ বেপারীর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি ঘটনার কথা সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বলেন,ঘটনার বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা এবং বাড়িতে ছিলাম না।তাহলে কিভাবে তারা আহত হয়েছেন..? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,বাড়ির একটি বিদ্যুতের খুঁটি নিয়ে তাদের সাথে আমাদের ঝামেলা হয়েছে।
এক পর্যায়ে তিনি বলেন আমাদের বাড়িতে ১৫/২০টি ঘর রয়েছে তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেই আপনারা ঘটনা জানতে পারবেন।তার কথার প্রসঙ্গে এই প্রতিবেদক তাকে প্রশ্ন করেন তাহলে বাড়িতে এত লোক থাকা সত্ত্বে আপনাদের নামে কেনো তাদের এই অভিযোগ…? এমন কথায় তিনি বলেন তাহলে সেটা আপনারা এলাকায় এসে চেয়ারম্যান,মেম্বারকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারেন।তার কাছে চেয়ারম্যান মেম্বারের নাম্বার চাওয়া হলেও তিনি তাদের সাথে যোগাযোগ করার ব্যবস্থা করে দেন নি।