চাঁদপুরে শত্রুতার জেরে গবাদি পশু খামারির দু’টি গরুকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়েছে। এ ঘটনায় খামারের মালিক নাছির উদ্দিন তার পালিত পশুর প্রতি নিষ্ঠুর আচরনের অভিযোগ এনে অভিযুক্ত মােস্তফা মিয়াজী ও লাকি বেগমকে আসামি করে চাঁদপুর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
৮ জুলাই বৃহস্পতিবার চাঁদপুর শহরতলীর পশ্চিম বিষ্ণুদী (পৌর ৯নং ওয়ার্ড) মিয়াজী বাড়িতে এই অমানবিক ঘটনাটি ঘটে।
খবর পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক ফারুক হোসেন সংঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এলাকাবাসীর পরামর্শে মারা যাওয়ার উপক্রম একটি গরু জবাই করে অর্ধেক দামে বিক্রি করে দেন খামারি। আর জখমের চিহ্ন নিয়ে বেঁচে থাকা অপর গরুটি নিয়ে বিচার প্রার্থনা করছেন অসহায় তিনি।
থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়, ঘটনার দিন রাত ১টার সময় অভিযুক্ত মোস্তফা ও তার স্ত্রী লাকি বেগমসহ অজ্ঞাত আরো ৩/৪ জন মিলে খামারে ঢুকে বেশ কয়েকটি গরুকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। এসময় গরুর চিৎকারে খামারি নাছির উদ্দিন ও তার স্কুল শিক্ষিকা স্ত্রী ঘুম ভেঙ্গে দৌঁড়ে খামারে ছুটে গিয়ে দেখেন দু’টো গরু মাটিতে পড়ে কাতরাচ্ছে। তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে আঘাতকারীরা দেশীয় অস্ত্র হাতে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এরপর ভোরে এলাকাবাসির পরামর্শে মরে যাওয়ার উপক্রম কালো গরুটি কসাই ডেকে ৫১ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন। এই গরুটি ২ মাস আগে ৭৫ হাজার টাকায় ক্রয় করা হয়েছিলো। বর্তমানে আরো একটি গরু মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে।
খামারি নাছির উদ্দিন মিয়াজী জানান, দীর্ঘ ৩৩ বছর তিনি সৌদি আরবে প্রবাসী ছিলেন। প্রবাসে থেকেই ৫বছর আগে কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে নিজের বাড়িতে এই খামার গড়ে তোলেন। যাতে করে দেশে ফিরে জীবিকা নির্বাহের পাশাপাশি এলাকার বেকার যুবকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারেন। কিন্তু শুরু থেকেই হিংসা পরায়ণ হয়ে তার প্রতিবেশী মোস্তফা মিয়াজী খামার নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র করে আসছে।
তিনি বলেন, করোনার কারনে ২ বছর আগে আমি দেশে ফিরে আসি। এরপর খামারে পশুপালন বাড়াতে থাকি। এতে করে ওদের শত্রুতাও বেড়ে যায়। তারা বহুবার রাতের আঁধারে খামারে ঢুকে অবোলা প্রাণীদের ক্ষতি করতে থাকে। দেড় বছর আগেও তারা রাঁতের আঁধারে আমার একটি গরুকে এসিড ঢেলে শরীরের অর্ধেক পুড়িয়ে দেয়। এই ঘটনা তৎকালীন স্থানীয় কাউন্সিলর বিল্লাল হোসেন মাঝিকে অবগত করা হয়েছিল। কিন্তু তখনও সুবিচার পাইনি।
নাছির উদ্দিন আরো জানান, আমি বিদেশ থাকাকালীন এই খামারটি তৈরী করে দেয়ার জন্যে আমার প্রতিবেশি ও আপন চাচাতো ভাই ছাত্তার মিয়াজিকে ১৩ লাখ টাকা দিয়েছি। সে মাত্র পাঁচ লাখ টাকার কাজ করে বাকি ৬ লাখ টাকা মেরে দিয়েছে। দেশে ফিরে টাকার হিসেব চাওয়ায় তারা আমার সাথে শত্রুতা শুরু করে। ছাত্তার মিজি আমার টাকা মেরে চট্টগ্রামে বসবাস করছে। বর্তমানে ছাত্তার মিয়াজীর ছোট ভাই মোস্তফা আমার খামারটি ধ্বংস করতে উঠেপড়ে লেগেছে।
সে আমাকে ও আমার স্ত্রী-সন্তানদের খুন করে লাশ গুম করে ফেলাসহ নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে। বর্তমানে স্ত্রী-স্তান নিয়ে নিরাপত্ততাহীনতায় রয়েছে জানিয়ে খামারি নাছির উদ্দিন মিয়াজী চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের কাছে সুবিচার কামনা করেন।