গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র নদের অব্যাহত ভাঙনে গৃহহীন হয়ে পড়েছে প্রায় দুই হাজার পরিবার।আবাদী জমি ও বসতভিটা হারিয়ে পরিবারগুলো চরম দুর্দশার মধ্যে পড়েছেন।ভাঙন অব্যাহত থাকায় হুমকির মুখে রয়েছে লোকজন।জানা গেছে,এ বছর সরকারি হিসেবে বন্যায় ফুলছড়ি উপজেলার ২ হাজার ৩৯টি পরিবার ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনের শিকার হয়ে তাদের বসতভিটা হারিয়েছেন।আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৭ হাজার ৫১৩টি পরিবার।
নদী ভাঙনে ক্ষতবিক্ষত এসব পরিবার জায়গা জমি না থাকায় আশ্রয় নিয়েছেন আত্মীয়-স্বজন,প্রতিবেশি ও জেগে উঠা চরসহ বিভিন্ন এলাকায়।সবচেয়ে বেশি ভাঙন কবলিত এলাকাগুলো হচ্ছে উড়িয়া ইউনিয়নের ভুষিরভিটা,মধ্য উড়িয়া,গজারিয়া ইউনিয়নের গলনা,ঝানঝাইর,ভাজনডাঙা,ফুলছড়ি ইউনিয়নের পিপুলিয়া,পূর্ব গাবগাছি,টেংরাকান্দি,বাজে ফুলছড়ি,বাগবাড়ি, ফজলুপুর ইউনিয়নের খাটিয়ামারী,কুচখালী,এরেন্ডাবাড়ী ইউনিয়নের ডাকাতিয়ার চর ও জিগাবাড়ী গ্রাম।
ব্রহ্মপুত্র নদের বুকে এসব এলাকার অবস্থান হওয়ায় তীব্র স্রোতে চোখের নিমিষেই বিলীন হচ্ছে আবাদী জমি ও বসতভিটা।গজারিয়া ইউনিয়নের গলনা গ্রামের ছাত্তার মিয়া জানান,বন্যার পানি নেমে গেলেও মানুষজনের মধ্যে বড় আতংক হয়ে দাঁড়িয়েছে নদী ভাঙন।প্রায় ৪০ বছর আগে নদী ভাঙনে বসতভিটা হারিয়ে গলনা গ্রামে আশ্রয় নিয়েছিলেন।চরের মধ্যে যেটুকু জমি ছিল তা দিয়ে ভালই সংসার চলতো।তিনি আরও বলেন,ঘরের সব জিনিস নিতে পারিনি।হাতের কাছে যা পেয়েছি তাই নৌকায় তুলে নিয়েছি।
গজারিয়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য হাসান আলী বলেন,গলনা গ্রামে প্রায় ৫শত পরিবার বসবাস করে আসছে।নদীতে পানি কমে গিয়ে তীব্র স্রোতে ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে গেছে।এরই মধ্যে একটি গুচ্ছগ্রাম সহ ২শত পরিবার ভাঙনের শিকার হয়েছে।লোকজন তাদের বাড়িঘর সরানোয় সময় পাচ্ছেন না।এব্যাপারে ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু রায়হান দোলন বলেন,বন্যা ও নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ২৫ মে. টন জিআর চাল,নগদ ৫০ হাজার টাকা ও ৪শত প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।