ইসলাম ধর্মের অবমাননা মামলায় কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের কথিত ভন্ডপীর আব্দুর রহমান ওরফে শামীমকে (৫৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাত ১টার দিকে উপজেলার পশ্চিম- দক্ষিণ ফিলিপনগর গ্রামের নীজ আস্তানা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।আব্দুর রহমান ওরফে শামীম দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ ফিলিপনগর গ্রামের মৃত জেসের মাস্টারের ছেলে।
বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে দৌলতপুর থানায় মামলা দায়েরের পর তাকে গ্রেফতার হয়।কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বড় আইলচারা গ্রামের মৃত হেলাল উদ্দিনের ছেলে খালিদ হাসান সিপাই বাদী হয়ে শামীমকে আসামী করে মামলাটি করেন।এর আগে গত ১৬ মে রাতে পশ্চিম-দক্ষিণ ফিলিপনগর গ্রামের মহাসিন আলীর কিশোর ছেলে আঁখি (১৭) ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে।মহাসিন আলী ওই গ্রামের কথিত ভন্ডপীর শামীমের অনুসারী হওয়ায় ছেলের মরদেহ তার হাতে তুলে দেন।
ওই দিন রাতে শামীম তার অনুসারীদের নিয়ে ঢাকঢোল পিটিয়ে নেচে-গেয়ে আঁখির মরদেহ দাফন করেন।পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে স্থানীয় আলেম-ঈমাম-মুয়াজ্জিনদের নেতৃত্বে সমাবেশ আহবান করা হলেও পুলিশের আশ্বাসে তা থেমে যায়।সংশ্লিষ্ট এলাকার মুসলিম ও ইসলাম ধর্ম প্রসঙ্গে জানাশোনা ভালো এমন ব্যক্তিরা ঘুরছিলেন উপজেলা প্রশাসন আর দৌলতপুর পুলিশের দ্বারে দ্বারে।
দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমিন আক্তার বলেন,কয়েক মাস আগে শামীমের ইসলাম বিরোধী কর্মকান্ড জানার পর আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে সর্তক করে দিয়েছিলাম।শামীমের ভাই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ফজলুর রহমান (সান্টু মাস্টার) বলেন,যত দ্রুত সম্ভব তাকে বিচারের আওতায় নেওয়া উচিত।তার কর্মকান্ডে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ ছিল।তাকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশকে ধন্যবাদ।
কুষ্টিয়া-১ দৌলতপুর আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম সারোয়ার জাহান বাদশা বলেন,আমরা একই গ্রামের মানুষ।প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় শামীম নিখোঁজ ছিল।ইসলামের নামে শামীম আস্তানা বানিয়ে যা করছে তা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দৌলতপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম জানান,শামীমের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা ছাড়াও মানুষকে জিম্মি করে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও চাঁদাবাজিসহ মামলার এজাহারে আটটি অভিযোগ আনা হয়েছে।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন জানান,আস্তানায় অভিযান চালিয়ে শামীমকে গ্রেফতার করা হয়েছে।তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।