২০২১ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে ৯৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। রোববার দুপুর সাড়ে ১২টায় কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মো. আসাদুজ্জামান ফলাফল তুলে ধরে জানান, এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৪ হাজার ১৫৩ জন শিক্ষার্থী। কোভিড মহামারীর কারণে বিলম্বিত শিক্ষাবর্ষ শেষে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে হওয়া এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় সারা দেশে পাস করেছে ৯৫ দশমিক ২৬ শতাংশ শিক্ষার্থী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ২০২১ সালের উচ্চ মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ করেন। পরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সংবাদ সম্মেলন করে এবারের ফলাফলের বিস্তারিত তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, পাসের হারের দিকে কুমিল্লা দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। প্রথম স্থানে রয়েছে যশোর শিক্ষা বোর্ড; সেখানে গড় পাসের হার ৯৮.১১ শতাংশ। আর তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে রাজশাহী বোর্ড; সেখানে গড় পাসের হার ৯৭.২৯ শতাংশ।
কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের পাসের হারের ফলাফলে এবার বেশ চমক দেখা গেছে। ২০২০ সালের অটো পাসের ফলাফল বাদ দিলে এর আগের অন্তত পাঁচটি শিক্ষাবর্ষের ফলাফলে পাসের হারে বেশ পিছিয়েই ছিল বোর্ডটি। পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেখা যায়, ২০১৯ সালের এ বোর্ডে পাসের হার ছিল ৭৭.৭৪ শতাংশ, ২০১৮ সালে ৬৫.৪২ শতাংশ, ২০১৭ সালে ৪৯.৫২ শতাংশ, ২০১৬ সালে ৬৪.৪৯ শতাংশ এবং ২০১৫ সালে ছিল ৫৯.৮০ শতাংশ। কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেন, ২০২১ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় কুমিল্লা বোর্ডের অধীনে ছয়টি জেলার এক লাখ ১৪ হাজার ৫৫৯ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয় এক লাখ ১১ হাজার ৬৮০ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ৯৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
এর মধ্যে ছেলে শিক্ষার্থী পাস করেছে ৫০ হাজার ৬৫ জন। আর মেয়ে শিক্ষার্থী পাস করেছে ৬১ হাজার ৬১৫ জন। আসাদুজ্জামান আরও বলেন, এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৪ হাজার ১৫৩ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে মেয়ে শিক্ষার্থী আট হাজার ৭৫৭ জন। আর ছেলে শিক্ষার্থী পাঁচ হাজার ৩৯৬ জন। ছয় জেলার মধ্যে শতভাগ পাস করেছে এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৯৭টি। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আরও বলেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে গত বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা বাতিল করা হয়। শিক্ষার্থীদের জেএসসি ও এসএসসির ফলের গড় অনুযায়ী গত বছর এইচএসসির ফল নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পায় নয় হাজার ৩৬৪ জন শিক্ষার্থী। ২০২০ সালে দেশে মহামারীর প্রকোপে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া যায়নি। তবে ২০২১ সালে পরীক্ষা ছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের পরের ধাপে পাঠাতে চায়নি সরকার। ফলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের অপেক্ষায় আট মাস পিছিয়ে যায় এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা।
স্বাভাবিক সময়ে এপ্রিলে এ পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও তা শুরু হয় গত ২ ডিসেম্বর। বিশেষ পরিস্থিতিতে এবার সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে গ্রুপভিত্তিক তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ে ছয়টি পত্রে এইচএসসি পরীক্ষা হয়। সময় কমিয়ে আনা হয় দেড় ঘণ্টায়। ২ হাজার ৬২১টি কেন্দ্রে ৯ হাজার ১৮৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৩ লাখ ৭১ হাজার ৬৮১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। বাংলা ও ইংরেজির মতো আবশ্যিক বিষয়গুলোর পরীক্ষা এবার নেওয়া হয়নি। তার বদলে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে সেসব বিষয়ের মূল্যায়ন করে পূর্ণাঙ্গ ফলাফল তৈরি করা হয়েছে।