কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড় থেকে ১৫ মার্চ থেকে পুরো রমজান মাস দেশওয়ালীপট্টি মোড় পর্যন্ত সকল প্রকার থ্রিহুইলার -রিকশা, অটোরিকশা, ইজিবাইক, সিএনজি অটোরিকশা পরীক্ষামূলকভাবে বন্ধ থাকবে। শুধু ইঞ্জিনচালিত প্রাইভেট যানবাহন ও পথচারীরা এই পথে চলাচল করবেন।
কুমিল্লা নগরীতে যানজট নিরসনে গতকাল কুমিল্লা টাউন হল মিলনায়তনে মতবিনিময় সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই তথ্য জানান সদর আসনের সংসদ সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার।
এছাড়া কুমিল্লায় টোকেন বাণিজ্য বন্ধ না হলে যানজট বন্ধ হবে না বলেও সভায় তীর্যক মন্তব্য করেছেন এমপি বাহার।
গতকাল কুমিল্লার যানজট নিরসনে বিশেষ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন। এমপি বাহার কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপারকে অনুরোধ করেন এই টোকেন বাণিজ্যের মূল হোতাদের আইনের আওতায় আনার জন্য।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরফানুল হক রিফাতের সভাপতিত্বে নগরীর যানজট নিরসনে নাগরিক প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম, পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী ড. শফিকুল ইসলাম।
কুমিল্লা টাউন হল মিলনায়তনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।সোমবার সন্ধ্যায় সভায় আরো সিদ্ধান্ত হয় কুমিল্লার প্রধান সড়কে কোন ভ্যানগাড়ি থাকতে পারবে না। ফুটপাত গুলোকে দখল মুক্ত করতে হবে। ৭ সিটের অটোরিকশা বন্ধ থাকবে, ২ সিটের অটোরকিশা চলবে লাইসেন্স নিয়ে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস নগরীর টমছমব্রীজ এলাকায় থামবে, কান্দিরপাড়ে প্রবেশ করবে না।সভার সিদ্ধান্তক্রমে এমপি বাহার বলেন, পরীক্ষামূলক ভাবে আগামী ১৫ মার্চ থেকে পুরো রোজার মাস কান্দিরপাড় থেকে দেশওয়ালিপট্টি মোড় পর্যন্ত কোন রিকশা অটোরিকশা ভ্যান সিএনজি চলবে না। প্রাইভেট গাড়ী ও পথচারীরা শুধু এই পথে চলাচল করবেন। আর রাস্তার উপর কোন ইট বালু সিমেন্ট রেখে নির্মান কাজ কোন ভাবেই চালানো যাবে না।
সভার প্রধান অতিথি এমপি বাহার কুমিল্লা সিটি কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন, আজকের পর থেকে কুমিল্লা সিটিতে যেসব মার্কেট আছে বেইজম্যান্ট পার্কিং নিয়ে অনুমোদন নিয়েছে কিন্তু তাদের যানবাহন পার্কিং করার সুবিধা নেই- সেই সব বেইজমেন্টগুলোতে বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান করে ভাড়া দেয়া হয়েছে সেগুলো থেকে বেইজমেন্ট পার্কিং মুক্ত করা করতে হবে। প্ল্যান বহির্ভুতভাবে সকল স্থাপনার কাজ বন্ধ রাখতে হবে।
সভার সভাপতি সিটি মেয়র আরফানুল হক রিফাত বলেন, আমার নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি গুলোর মধ্যে একটি ছিলো যানজট নিরসন। আজ সে বিষয়ে বিশেষ সভায় আলোচনা হলো- আমরা সকলের সহযোগিতায় যানজট নিরসন করতে পারবো। আর সিএনজি থেকে যারা টাকা তুলে তাদের একটি লম্বা লিস্ট আমার কাছে আছে, যাদের অনেকেই আমাদের ঘরানার। আমি এটা এসপি মহোদয়ের কাছে দিবো- তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম বলেন, আমরা সবাই সম্মিলিত ভাবে এই সমস্যা থেকে মুক্ত হতে পারি। জনগণকে সচেতন না করে আইন প্রয়োগ করে কিছু হবে না- আগে সাধারণ মানুষ সচেতন হলেই নাগরিক সমস্যা থেকে আমরা মুক্ত হতে পারি।
পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান বলেন, কারা সড়কে চাঁদাবাজি করেন তাদের তথ্য আমাদের জানা আছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নিতে চাই। আমরা প্রতিনিয়ত সড়কে নানান অনিয়মের দায়ে মামলা জরিমানা করে যাচ্ছি- সড়কে শৃঙ্খলায় তা অব্যাহত থাকবে।
সভায় নগরীর জনপ্রতিনিধি, সামাজিক, সাংস্কৃতি, বনিজ্যিক, সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের প্রতিনিধিসহ যানজট নিরসনে সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ তাদের মতামত তুলে ধরেন। তাদের মতামতের ভিত্তিতে অতিথিগণ আলোচনার মাধ্যমে কুমিল্লার যানজট নিরসনে কঠোর সিদ্ধান্তগুলোর কথা জানান।