কুমিল্লা শহরের ট্রমা সেন্ট্রাল হাসপাাতালে ভুল চিকিৎসায় ইমরান হোসেন নামের এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। অপারেশনের পর লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই যুবকের মৃত্যু হয়।
রোববার (১৫ মার্চ) রাতে এই ঘটনা ঘটে। ইমরানের মৃত্যুর খবরে হাসপাতাল জুড়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। নিহতের স্বজনরা ভুল চিকিৎসায় ইমরানের মৃত্যু দাবি করে হাসপাতালে ভাঙচুর চালায়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নিহত ইমরান হোসেন (২১) কুমিল্লা নগরীর ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের মুরাদপুর এলাকার প্রবাসী হুমায়ুন মিয়ার ছেলে। স্বজনরা জানান, ইমরান হোসেন দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। শ্বাসকষ্ট নিয়ে ইমরান শহরের ট্রমা হাসপাতালের চিকিৎসক আতাউর রহমানের কাছে চিকিৎসা নিতে যান। পরে চিকিৎসক ইমরানের ফুসফুসে সমস্যা শনাক্ত করে অপারেশনের পরামর্শ দেন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী শুক্রবার (১৪ মার্চ) সকালে ইমরানকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। চার ঘণ্টার অপারেশনের কথা থাকলেও সময় লাগে সাত ঘণ্টার মতো। অপারেশনের পর ইমরানের অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করেন।
রোববার বিকেলে রোগীর কোনো সাড়া শব্দ না পাওয়ায় স্বজনরা রোগী মারা গেছে দাবি করলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীকে লাইফ সাপোর্টে নেয়ার কথা বলে। বিকেল পার হয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগী মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেনি।
ইমরানের চাচা জাকির হোসেন বলেন, আমার ভাতিজাকে তারা সামান্য অপারেশনের কথা বলেছিল। কিন্তু তারা সাত ঘণ্টা অপারেশন থিয়েটারে রেখেছে। পরে রোগীর অবস্থা খারাপ, এ কথা বলে আইসিইউতে নেয়। কিন্তু আইসিইউতে নেয়ার পর প্রায় ৩ দিন হয়ে গেলেও রোগীর কোনো উন্নতি আমরা দেখিনি। সন্ধ্যায় আমরা রোগীকে দেখতে চাইলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীকে দেখতে দেয়নি। পরে আইসিউতে ঢুকে দেখা যায় রোগী মারা গেছে। এরপরেও তারা রোগীর বিভিন্ন মেডিকেল টেস্ট করানোর কথা বলে ফি নিয়েছে, কিনিয়েছে ওষুধ।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, আমাদেরকে ২৫ হাজার টাকার অপারেশনের কথা জানানো হয়। পরে আমাদের থেকে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা নেয়া হয় ধাপে ধাপে। একজন রোগীর ৩ দিনে লাখ টাকার ওষুধ কীভাবে লাগে, এ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন ইমরানের চাচা।
এ বিষয়ে জানতে কুমিল্লা ট্রমা হাসপাতালের পরিচালক আবদুল হক ও চিকিৎসককে একাধিকবার কল দিয়েও কথা বলা সম্ভব হয়নি।