কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৫৩ লাখ ৯৪ হাজার ৬শত ৯৪ টাকা আত্মসাতের প্রমাণাধি সংযুক্ত করে স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন দফতরসহ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই হাসপাতালের কর্মরত মাঠকর্মীরা।এই আত্মসাতের কাজে হাসপাতালের প্রধান সহকারী শাহ আলম ও ইপিআই টেকনিশিয়ান নিজাম উদ্দিন মজুমদারসহ দুইজন জড়িত আছে বলে লিখিত অভিযোগে জানা গেছে।প্রথমজন হাসপাতালের প্রধান সহকারী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন।আর বাকি অন্যজন ইপিআই টেকনিশিয়ান পদে দায়িত্ব পালন করেন।
অভিযোগ থেকে জানায়,অভিযুক্ত দুই জন মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত ২০২০-২১ অর্থবছরের কোভিড-১৯ টিকাদান কর্মসূচি,এমআর ক্যাম্পেইনসহ আরো অন্যান্য প্রশিক্ষনের জন্য বরাদ্দ থেকে প্রায় ৫৩ লক্ষ ৯৪ হাজার ৬শ ৭০ টাকা হাসপাতালের কোন কাজে ব্যয় না করে আত্মসাৎ করেন।হাসপাতালের নথিপত্র ও দায়ের করা অভিযোগ থেকে জানাযায়,চলতি বছরের গত ৩১ মার্চ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর করোনা প্রতিরোধে দেশের সব জেলা উপজেলা পর্যায়ে ভ্যাকসিন প্রশিক্ষণ ও পরিচালনার জন্য বরাদ্দ দেন।
সে অনুযায়ী কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের ৬৬টি ওয়ার্ডের জন্য প্রায় ৩৪ লাখ ২ হাজার ৮শ টাকা বরাদ্দ পায়।ওই বরাদ্দ বিবরণীতে বলা হয় প্রতিটি ইউনিয়নে ১টি করে উপজেলার ৩টিসহ মোট ২৫টি নল টিকাদানকারী হিসেবে প্রশিক্ষণ শেষে কাজ শুরু করবেন।কিন্তু এখানে কোন প্রশিক্ষন না দিয়েই টিকাদানকারী ও স্বেচ্ছাসেবকদের নিকট থেকে প্রশিক্ষন নিয়েছেন এই মর্মে স্বাক্ষর নেয়া হয়ছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযোগে আরো বলা হয়েছে প্রতি দলে দুজন করে টিকাদানকারী মোট ৫০ জন,চারজন করে স্বেচ্ছাসেবী মোট ১০০ জন।২০টি দলে জনবল থাকার কথা ১৫০ জন। প্রতি ইউনিয়ন এবং উপজেলায় ২৫টি দল ৭২ দিন করে টিকার কার্যক্রম চালানোর কথা থাকলেও এর বিপরীতে ইউনিয়ন পর্যায়ে মাত্র ২দিন এ টিকাদান কার্যক্রম চালানো হয়।যে ২দিন ইউনিয়ন পর্যায় টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে সেই ২দিনের আপ্যায়ন খরচ করা কথা থাকলেও তা না করে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ ওই আপ্যায়ন ব্যয় ভার বহন করেন।
অন্যদিকে উপজেলা পর্যায় ৩টি দল টিকাদান কার্যক্রম করার কথা থাকলেও সে ক্ষেত্রে মাত্র ১টি দলই টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনা করে।সে ক্ষেত্রে টিকাদানে জন দূর্ভোগ বেড়ে যায়।এ ব্যাপারে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইপিআই টেকনিশিয়ান নিজাম উদ্দিন মজুমদার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দাবি করেন,আমি এ বিষয়ে কিছুই জানিনা এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (টিএইচও) নাজমুল আলম স্যারের সাথে যোগাযোগ করেন।তিনিই সব বলতে পারবেন।তাছাড়া গত ২২ সেপ্টেম্বর হতে আমি বদলিজনিত কারনে মুরাদনগর থেকে চলে এসেছি বর্তমানে আমি কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আছি।
একই প্রসঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান সহকারী শাহ আলম বলেন,হাসপাতালের টাকা আত্মসাতের সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।এছাড়া কেউ তাকে তলবও করেনি এবং তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেনওনা।রোববার সকালে এই ঘটনা প্রসঙ্গে কুমিল্লা সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসেন সাংবাদিককে বলেন,অভিযোগের বিষয়টি তিনি জানেন।তবে তিনি এ বিষয়ে কোন কথা বলতে হলে সাংবাদিককে সরেজমিনে তার অফিসে যেয়ে কথা বলতে হবে বলে জানান।টেলিফোনে কিছু বলা যাবেকিনা সে প্রশ্নোত্তরে তিনি জানান অভিযোগের বিষয়ে আমরা কাজ করছি এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারবোনা।
অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার জন্য মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (টিএইচও) নাজমুল আলমের মুঠোফোন ০১৯১৩১৮৮৪৫৯ নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার কোন বক্তব্য নেয়া যায়নি।