গত ০৪ মার্চ ২০২৩ইং তারিখ দুপুরে কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী মডেল থানাধীন আলেখারচর আর. ইসলাম প্লাজার নিচে একটি দোকানের ভিতরে গ্রেফতারকৃত আসামী সাদ্দাম হোসেন (৩০) কর্তৃক প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যাচেষ্টার উদ্দেশ্যে ভিকটিম মোঃ সাইফুল ইসলাম সাদ্দাম (৩৯) কে ছুরিকাঘাত করে।
গ্রেফতারকৃত আসামী সাদ্দাম পেশায় দিনমজুর এবং মাদক সেবনকারী। বর্ণিত প্লাজার ২য় ও তয় তলায় ব্যাংক অবস্থিত হওয়ায় সাধারণ মানুষ লেনদেনের উদ্দেশ্যে সেখানে গমন করত এবং গ্রেফতারকৃত আসামী বিভিন্ন সময় ব্যাংকে গমনকৃত ব্যক্তিদেরকে যাওয়া আসার সময় পথিমধ্যে ছুরি, সুইচ গিয়ার সহ অন্যান্য অস্ত্র দেখিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করত। বিষয়টি উক্ত প্লাজার মালিক ভিকটিম সাইফুল আসামী সাদ্দাম এর বড় ভাই নুরুল ইসলাম রানাকে অবগত করলে আসামী সাদ্দাম বিষয়টি জানতে পারে এবং তার মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এরই জের ধরে আসামী সাদ্দাম ভিকটিম সাইফুলকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার জন্য সুযোগ খুজতে থাকে। পরবর্তীতে গত ০৪/০৩/২০২৩ইং তারিখ দুপুরে ভিকটিম উক্ত প্লাজার নিচে একটি দোকানে অবস্থানকালীন সময়ে সাদ্দাম সুযোগ বুঝে ধারালো সুইচ গিয়ার দিয়ে ভিকটিমের হাতে, পিঠে, পায়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে।
এসময় উক্ত দোকানের কর্মচারী ও সাধারণ মানুষ ঠেকাতে এলে সাদ্দাম তাদের উপরও চড়াও হয়। পরবর্তীতে ভিকটিম ও উক্ত দোকানের কর্মচারীর চিৎকারে লোকজন এগিয়ে এলে সাদ্দাম সেখান থেকে পালিয়ে যায় এবং ভিকটিমকে উদ্ধারপূর্বক কুমিল্লা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে ভিকটিমের চাচা বাদী হয়ে গত ০৭ মার্চ ২০২৩ ইং তারিখ কোতয়ালী মডেল থানায় একটি হত্যাচেষ্টার মামলা রুজু করে। পরবর্তীতে ভিকটিম সাদ্দাম র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। উল্লেখ্য, ভিকটিম সাইফুল কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী মডেল থানার আলেখারচর গ্রামের মৃত রফিকুল ইসলাম সর্দ্দার এর ছেলে।
নৃশংস ঘটনাটি ঘটনাস্থলের দোকানে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরাতে ধারণ হয় এবং পরবর্তীতে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোড়নের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর হওয়ায় তাৎক্ষনিকভাবে উক্ত আসামীকে গ্রেফতার করতে র্যাব-১১, সিপিসি-২ মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করে। পরবর্তীতে ছায়াতদন্তে প্রাপ্ত তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় র্যাব-১১, সিপিসি-২ ও র্যাব-৯ এর যৌথ অভিযানে গত ১৬ মার্চ রাতে হবিগঞ্জ জেলার কোতয়ালী থানাধীন জিন্দাবাজার এলাকা হতে বর্ণিত আসামী মোঃ সাদ্দাম (৩০), পিতা-মোঃ মিজানুর রহমান, সাং-আলেখারচর, থানা-কোতয়ালী মডেল, জেলা-কুমিল্লা’কে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকালে তার নিকট হতে ঘটনায় ব্যবহৃত সুইচ গিয়ারটি উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ঘটনা পরবর্তীতে সে তৎক্ষনাত কুমিল্লা থেকে পালিয়ে তার ০৪ বছর পূর্বের কর্মস্থল সিলেট জেলার জিন্দাবাজার এলাকায় গোপনে থাকে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। পরবর্তীতে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে সে তার পূর্ব পরিচিত একটি কাপড়ের দোকানে চাকুরী শুরু করে।
তাকে আরো জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে দীর্ঘদিন যাবত ইয়াবা সহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য সেবন করত এবং মাদকের অর্থ যোগাড় করার জন্য ইতিপূর্বে চাঁদাবাজি, চুরিসহ অন্যান্য অপরাধমূলক কার্যও সম্পাদন করেছে। দীর্ঘদিন যাবত মাদক সেবনে মস্তিষ্কের বিকারগ্রস্থতার দরুণ সে উক্ত কার্য সম্পাদন করেছে বলে জানায়। উল্লেখ্য, গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে পূর্বে কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী মডেল থানায় মাদক সংক্রান্তে ০৩ টি মামলা রয়েছে।
উক্ত বিষয়ে গ্রেফতারকৃত আসামীকে কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী মডেল থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।