1. bpdemon@gmail.com : Daily Kaljoyi : Daily Kaljoyi
  2. ratulmizan085@gmail.com : Daily Kaljoyi : Daily Kaljoyi
কুবিতে লোক প্রশাসন বিভাগে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ৪ মাস
বাংলাদেশ । শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
ব্রেকিং নিউজ
ডাঃ তাহসীন বাহার সুচনার বিজয়ে কুমিল্লার লন্ডন প্রবাসীদের ইফতার ও মিষ্টি বিতরন এক মিনিটে ৮টি ক্রিম বিস্কুট খেয়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড এ আবেদন । বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেলেন সাকিব আল হাসান অবরোধের প্রতিবাদে ইবি ছাত্রলীগের মোটরসাইকেল শোডাউন অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে ফুলবাড়ী প্রেসক্লাবের ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন বিএনপি জামায়াতকে অগ্নি সন্ত্রাসের পথ ছেড়ে নির্বাচনে আসার আহবান-এমপি বাহার হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচনে  সৈয়দপুর পুলিশের সাফল্য, গ্রেফতার ৩ কুলাউড়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ সুপারের তদারকি জাপার সদস্য সচিবের বিরুদ্ধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ কুমিল্লায় হরতাল-অবরোধে ২২ পিকেটিং-ভাংচুর মামলা গ্রেফতার ১০৪

কুবিতে লোক প্রশাসন বিভাগে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ৪ মাস

বিল্লাল হোসেন :
  • প্রকাশিত: সোমবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২৩
  • ১৩০ বার পড়েছে

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ১৩ তম আবর্তনের শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কার্যক্রম চারমাস বন্ধ থাকার ঘটনা ঘটেছে। তিন শিক্ষার্থীর উপস্থিতির শর্ত পূরণ না হওয়ায় পরীক্ষায় বসতে না দেওয়া নিয়ে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা বর্জনের মুখে এই ঘটনা ঘটে।

এবার একাডেমিক কাউন্সিলের হস্তক্ষেপে ওই পরীক্ষা আয়োজন হলেও, ফরম ফিলাপ করা দুই শিক্ষার্থীকে বসতে দেওয়া হয়নি পরীক্ষায়। অথচ তাদের উপস্থিতির হার ফরম ফিলাপ শুরুর আগেই জানিয়ে দিয়ে পরীক্ষায় বসতে পারবে কি না তা অবগত করার দায়িত্ব ছিল বিভাগের।

ভয়াবহ পরিস্থিতির মাঝে আছেন ওই ব্যাচের এক শিক্ষার্থী। তিনি উপস্থিতির শর্ত পূরণ না হওয়াদের একজন। ১১ তম ব্যাচে ভর্তি হওয়া ওই শিক্ষার্থী অসুস্থতার কারণে দুইবার রিএড নিয়ে ১৩তম ব্যাচের সাথে যুক্ত হয়েছিলেন। কিন্তু এবার উপস্থিতির শর্ত পূরণ না করতে পারায় তার ছাত্রত্ব বাতিল হতে যাচ্ছে।

এদিকে এসব বিষয় নিয়ে চার মাস ধরে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ করার দায় পুরোপুরি শিক্ষার্থীদের উপরেই দিচ্ছেন বিভাগটির প্রধান। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য বিষয়টিকে বলছেন ‘দুঃখজনকথ। আর উপাচার্য বলছেন ‘নিয়মের বাইরে গিয়ে একাডেমিক কাউন্সিলে মানবিক কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি, পরীক্ষা পেছানোর কালচার নিয়ে অসন্তুষ্ট একাডেমিক কাউন্সিল।’
ঘটনার বিস্তারিত জানতে ওই ব্যাচের একাধিক শিক্ষার্থীর সাথে যোগাযোগ করলে, তারা শুরুতে ‘বিভাগের ভয়েথ কথা বলতে রাজি হননি। পরে নাম প্রকাশ ননা করার শর্তে মুখ খুলেন তারা।

শিক্ষার্থীরা জানান, এই ঘটনায় চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে তাদের মধ্যে। করোনার দীর্ঘ ক্ষতির পর নতুন করে চারমাস একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় অন্য সকল বিভাগের তুলনায় পিছিয়ে পড়েছে তারা। এমন পরিস্থিতিতে চরম হতাশায় কেউ কেউ মাদকের দিকে ধাবিত হওয়ার কথা বলছেন, আর পড়াশোনায় সময় বেশি লাগায় বিয়ের চাপ আসছে নারী শিক্ষার্থীদের।
বিভাগটিতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি বছরের ২২ আগস্ট ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ষষ্ঠ সেমিস্টার পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু উপস্থিতির শর্ত পূরণ না হওয়ায় তিন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অনুমতি পাননি।

অথচ, তাদের ফরম ফিলাপ করা ও টাকা জমা দিতে দেওয়া হয়েছে। এমনকি বিভাগে তাদের কাগজপত্র জমা দেওয়ার সময়ও জানানো হয়নি তারা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। ফরম ফিলাপের সব কাজ শেষ হওয়ার পর তাদের জানানো হয় তারা উপস্থিতির শর্ত পুরণ না করায় পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।

বিভাগের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানান ওই ব্যাচের সকল শিক্ষার্থী। তারা সহপাঠী তিনজনকে নিয়ে পরীক্ষায় বসতে চেয়ে বিভাগীয় প্রধানের সাথে আলোচনা করেন। কিন্তু কোনো সুরাহা না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা বর্জনের সিদ্ধান্তে নেন তারা।
শিক্ষার্থীরা জানান, পরীক্ষায় বসতে লিখিত আবেদন, উপাচার্যের সাথে সাক্ষাৎসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় দ্বারে দ্বারে ঘুরেও সমাধান পাননি তারা। এভাবে কেটে যায় চার মাস।

এ ঘটনা পরবর্তীতে একাডেমিক কাউন্সিলে গেলে উপস্থিতির শর্ত পূরণ করতে না পারা সেই তিন শিক্ষার্থীকে ছাড়াই দুই জানুয়ারি থেকে চার মাস ধরে আটকে থাকা পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু করা হয়।
শিক্ষার্থীরা জানায়, তারা চেয়েছেন ফরম ফিলাপ যেহেতু হয়েছে বিভাগ থেকে সবাইকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেওয়া হোক। তাই সবাই একমত হয়ে পরীক্ষা বর্জন করেছিলেন।

কিন্তু পরবর্তীতে এটিই তাদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়।পরিচয় গোপন রেখে এক শিক্ষার্থী বলেন, “বিভাগ থেকে আমরা শুধুই অবহেলা পেয়েছি। চারটি মাস একাডেমিক কার্যক্রম থেকে দূরে ছিলাম। এতে আমাদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।”
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “পরিবার থেকে বাবা-মা পড়াশুনা কতদূর জানতে চাইলে কোনো উত্তর দিতে পারি না। মারাত্মক হতাশায় দিন কেটেছে। এভাবে পড়াশুনা বিচ্ছিন্ন থাকবো এতোদিন এটা কল্পনাও করিনি। কেউ কেউ মাদকে আসক্ত হয়ে গেছে, আবার কারো বিয়ের জন্য পরিবার চাপ এসেছে। পারিবারিক চাপে ও বিভাগের শিক্ষার্থীদের প্রতি শিক্ষকদের এমন অবহেলায় অনেকেরই স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে।”

ছাত্রত্ব বাতিল হতে চলা সেই শিক্ষার্থী বলেন, “আমি ইনকোর্সের সবকিছু সম্পন্ন করেছি। চারটি কোর্সের মাঝে দুইটি কোর্সে আমার ৬০ পার্সেন্টের উপরে উপস্থিতি রয়েছে। আর দুইটিতে ৩৫ পার্সেন্ট করে উপস্থিতি। কারণ ক্লাস খুব বেশি নেয়া হয়নি, যা নেয়া হয়েছে কোর্সের শুরুতেই নেয়া হয়েছে। অথচ আমাকে কখনো জানানো হয়নি এই দুই কোর্সে আমার উপস্থিতি কম, পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ নাও পেতে পারি।”

তিনি আরও বলেন, “সবকিছু ঠিকঠাকই ছিল। আমি ফরম ফিলাপ করেছি, ব্যাংকে টাকা জমা দিয়েছি। এমনকি বিভাগেও কাজগপত্র জমা দেয়ার সময়েও বিষয়টা আমাকে জানায়নি বিভাগ। পরবর্তীতে জানানো হয় আমার উপস্থিতির শর্ত পূরণ হয়নি আমি পরীক্ষা দিতে পারবো না।”

এদিকে চারমাস পিছিয়ে যাওয়ার সম্পূর্ণ দায় শিক্ষার্থীদের উপরই দিচ্ছেন বিভাগীয় প্রধান মোসা. শামসুন্নাহার। তিনি বলেন, “তারা ইচ্ছা করেই পরীক্ষা দেয়নি। তাদের দাবি ছিল সহপাঠীদের সাথেই পরীক্ষায় দিবে। কিন্তু তাদের উপস্থিতির শর্ত পূরণ হয়নি। তারা উপাচার্যের সাথেও এ বিষয়ে কথা বলেছে। একাডেমিক কাউন্সিলেও তাদের ছাড়া পরীক্ষা আয়োজনের সিদ্ধান্ত আসে। তিন শিক্ষার্থীকে এখানে বিভাগের বা পরীক্ষা কমিটির কোনো দায় নেই। ওরা পরীক্ষা পিছিয়েছে এটা ওদেরই দায়।”

বিভাগ ছাড় দিলে সুযোগ ছিল বলে মনে করছেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নুরুল করিম চৌধুরী। তিনি বলেন, “সবকিছু যেমন নির্দিষ্ট নিয়মনীতি অনুযায়ী চলে। তেমনি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতেও কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হয়। সেই শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির শর্ত পুরণ হয়নি। তবে বিভাগ থেকে যদি সুপারিশ করা হতো তবে আমরা হয়ত ছাড় দিতাম।”

চারমাস একাডেমিক কার্যক্রম পিছিয়ে যাওয়ার ঘটনা দুঃখজনক উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ- উপাচার্য অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবির বলেন, “এটা নিয়ে একাডমিক কাউন্সিলে দীর্ঘ সময় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আর আমাদের মানবিক হতে হয় নিয়মের মাঝে থেকেই। যে উপস্থিতির শর্ত পূরণ করতে পারেনি তার বিষয়টা বিভাগও গ্রহণ করেনি। আর বিভাগও আমার মনে হয় না কোনো সুপারিশ দিয়েছে। আর যে আগেও রিএড নিয়েছে এবারও শর্ত পূরণ করতে পারেনি এখানে তার নিজেরও গাফলতি রয়েছে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় একটা নিয়মে চলে। দুইবার রিএড নিয়েও এবার ৪০ পার্সেন্ট উপস্থিতির যে শর্ত সেটা তার ছিল না। একাডেমিক কাউন্সিলে মানবিকভাবে দেখা বা কোনোভাবে সুযোগ দেয়া যায় কিনা তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্ত নিয়মের বাইরে যাওয়ার সুযোগ ছিল না। তাই একাডেমিক কাউন্সিলেও মানবিক কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।”

তিনি আরও বলেন, “পরীক্ষা পিছানোর কালচারটা নিয়ে একাডেমিক কান্সিলের মেম্বাররা সবাই অসন্তুষ্ট। যাদের সমস্যা তারা ছাড়া বাকিদের পরীক্ষা নিয়ে নেয়ার ব্যাপারে সবাই সম্মত হয়েছে।”

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

Archive Calendar

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রকাশক কর্তৃক জেম প্রিন্টিং এন্ড পাবলিকেশন্স, ৩৭৪/৩ ঝাউতলা থেকে প্রকাশিত এবং মুদ্রিত।
প্রযুক্তি সহায়তায় Hi-Tech IT BD