ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ার প্রতিবাদে টাঙ্গাইল জেলার বাস ও ট্রাক দ্বিতীয় দিনের মতো ধর্মঘটে। এতে বিপাকে পড়েছেন কর্মস্থলমুখী মানুষ। এসব মানুষের এখন সিএনজি অটোরিকশা পিকআপ পাশাপাশি বাইক ভরসা। তবে যাত্রীদের গুনতে হচ্ছে ৩-৪ গুণ বেশি ভাড়া। এছাড়াও এই বাহনে মহাসড়কে চলাচলে ঝুঁকি তো থাকছেই। এদিকে হাইওয়ে পুলিশ জানিয়েছে মহাসড়কে সিএনজি অটোরিকশা দেখলেই মামলা দেওয়া হচ্ছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে যে, শনিবার সকাল থেকে নতুন বাসস্ট্যান্ড ও ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে যাত্রীদের ভিড় রয়েছে। বাসস্ট্যান্ডে সারিবদ্ধভাবে বাস দাঁড়িয়ে রয়েছে। বাস না পেয়ে যাত্রীরা সিএনজি অটোরিকশা বাইকে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন। আবার অনেকেই কয়েকটি স্থান থেকে যানবাহন পরিবর্তন করে কর্মস্থলে আসছেন। এতে করে সাধারণ মানুষের সময় ও টাকার অপচয় হচ্ছে এবং বিভিন্ন সমস্যা পড়তে হচ্ছে বলে জানা যায়।
ভুক্তভোগীরা জানান,সিএনজি রিকশাচালক আর বাইকারদের এমন ভাড়া চাওয়া বিরল ঘটনা। যেখানকার ভাড়া ৫০ টাকা চাওয়া হচ্ছে ১৫০ টাকা আবার কখনো ২০০ টাকা। ঢাকা গামী যাত্রীরা দৈনিক কালজয়ীকে জানান, টাঙ্গাইল থেকে চন্দ্রার বাস ভাড়া ৬০ থেকে ৭০ টাকা। সেখানে বাস বন্ধ থাকায় সিএনজি ভাড়া নিচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। ঢাকা মহাখালীর বাস ভাড়া গাড়িতে যেখানে ১৩০ থেকে ২৫০ টাকা, সেখানে কয়েকটিস্থানে গাড়ি পরিবর্তন করে গেলে খরচ হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা।
টাঙ্গাইল বাসস্ট্যান্ডে কথা হয় ঢাকার গামী সাইদুল প্রামাণিকের সঙ্গে। তিনি জানান, সরকারের পক্ষ থেকে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। এর প্রতিবাদ জানিয়ে ধর্মঘট করছে বাস চালকরা। তবে আমাদের অফিস খোলা থাকায় ৩গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে। যত ভোগান্তি আমাদের মতো সাধারণ মানুষেরা। ১০০ টাকার ভাড়া ৩০০ টাকা দিয়ে যেতে হচ্ছে।
অপর যাত্রী রুবেল হোসেন বলেন, আজ বিকেলে ঢাকায় আমার বোনকে নিয়ে যেতে হবে তিনি খুবই অসুস্থ। ভূঞাপুর থেকে টাঙ্গাইল শহরে আসতেই ১০০ টাকার উপরে খরচ হয়েছে। ঢাকা যেতেও আরও ৩-৪ জায়গায় গাড়ি পরিবর্তন করতে হবে। এতে ১জনের ঢাকা যেতে ৫০০ টাকার উপরে খরচ হবে। ঢাকা-যমুনা মহাসড়কে এক লোক অনেক সময় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কথা বললাম ঢাকাগামী আতিকুর রহমান বাবুর সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রায় এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছি। বাস বন্ধ থাকার বিষয়টি আমার জানা ছিলো না। এখন বিকল্প সিএনজি বা পিকআপে অথাবা এম্বুলেন্স করে ঢাকায় যাবো।
সিএনজি অটোরিকশাচালক নাম প্রকাশে ইচ্ছুক না বলেন, আমরা মানুষকে সেবা করার লক্ষে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক দিয়ে গাড়ি চালাচ্ছি। আমাদের খরচ বেশি তাই ভাড়াও নিচ্ছি বেশি। তবে মির্জাপুর এলাকায় হাইওয়ে পুলিশ সমস্যা করে। মামলা দিয়ে চার হাজারের বেশি টাকা নেয়। তবে ৫০০ টাকা হাতে দিলে তখন মামলা দেয় না। যাত্রী নেওয়ার সময় এক বাইকারে সাথে কথা বলে জানা যায়,তিনি তার একটা কাজে বের হয়েছে রাস্তায় যাত্রীদের ভীড় দেখে এক গরিব লোককে যার অতিরিক্ত ভাড়া না থাকায় তিনি তাকে বিনামূল্যে সাথে নিয়ে যাচ্ছেন।
মির্জাপুরের গোড়াই হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আজিজুল হক দৈনিক কালজয়ীকে বলেন, মামলার টাকা ছাড়া সিএনজিচালকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত কোন টাকা নেওয়া হয়না। মহাসড়কে সিএনজি দেখলেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।