“বাঙালি কৃষি নির্ভর জাতি। কৃষিতে উন্নয়ন ঘটলেই দেশের উন্নয়ন ঘটবে।” এমনই মন্তব্য করেন করলা চাষে ভাগ্যবদলের স্বপ্নদ্রষ্টা বিদেশ ফেরত সোহেল। সোহেল কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের মহালক্ষীপাড়া গ্রামের মাওলানা আব্দুল মালেকের ছেলে।
সোহেলের সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি একজন প্রবাসী ছিলেন। পরিবার পরিজন ছেড়ে সুদূর প্রবাসে থাকতে হতো তার। একটা নির্দিষ্ট সময় পর পর দেশে আসতেন। বিদেশের মাটিতে মন বাসতো না তার। এক প্রকার বাধ্য হয়ে দেশে ফিরে আসেন সোহেল। এর পর যুব উন্নয়ন থেকে কৃষির ওপর প্রশিক্ষণ করেন। তারপর থেকে কৃষি কাজে মনোনিবেশ করেন তিনি। প্রথম দিকে স্বল্প পরিসরে শুরু করলেও দিন দিন তিনি কৃষিকাজে পুরোপুরিভাবে মনোনিবেশ দিয়েছেন। এ কাজে তিনি অনলাইন থেকে বিভিন্ন পরামর্শ নিচ্ছেন বলে জানান। উপজেলা কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি অফিসার নাসিমা বেগমও নিয়মিত তার সবজি চাষ পর্যবেক্ষণ করেন। জানা যায়, নিজের জমির সাথে অন্যের জমি ইজারা নিয়ে এ বছর ১শত ঊনিশ শতক জমিতে বিভিন্নরকম সবজি চাষ করেন তিনি, এরমধ্যে ৩৬ শতক জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে করলা চাষে করেন তিনি। মালচিং পদ্ধতিতে করলা চাষ, যা অতিবৃষ্টির হাত থেকে ফসলকে সুরক্ষা দেয়, এবং খরচও কম ফলনও বেশি হয়। করলা’র ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী সবজি চাষ প্রিয় চাষি সোহেল। তিনি করলার পাশাপাশি বাকি ৮৩ শতক জমিতে স্কোয়াস, তরমুজ, টমেটো ক্যাপসিকাম, মিষ্টি কুমড়া, ফুলকপিসহ অন্যান্য সবজির আবাদ করেছেন। এবং বেশ লাভবানও হয়েছেন তিনি।
চাষি সোহেল বলেন, “প্রিয়জনদের ছেড়ে বিদেশবিভুঁইয়ে কাটিয়েছি অর্থ উপার্জনের আশায়।তেমন কোনো ভালো ফলাফল না পেয়ে অবশেষে দেশে ফিরে আসি। প্রথমে স্বল্প পরিসরে শাক-সবজির আবাদ শুরু করি। চাষে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজের জমির পাশাপাশি অন্যের জমি বন্ধক নিয়ে দিন দিন সবজি আবাদের পরিসর বৃদ্ধি করি। তিনি বলেন, মালচিং পদ্ধতিতে জমি তৈরি করেছি। এ পদ্ধতি অবলম্বন করলে বৃষ্টিতে ফসলের তেমন সমস্যা হয় না। সুযোগ বুঝে বাঁশ ও সুতো দিয়ে মাঁচা তৈরি করে চারা রোপণ করেছি। ১শত ঊনিশ শতক জমিতে অন্যান্য সবজির পাশাপাশি ৩৬ শতকের মধ্যে করলা চাষ করেছি। করলা চাষে ৩৬ শতকে আমার প্রায় ৫০ হাজার টাকা এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে। আমি আশাবাদী করলা চাষে আমি আশানুরূপ সাফল্য লাভ করবো।”
এদিকে খুচরা ব্যাবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্তমান বাজারে ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে করলা। করলার বাজারদরে করলা চাষিরা সন্তুষ্ট। করলা চাষে স্বল্প ব্যয়ে এ বছর লভ্যাংশ বেশি পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন অনেক চাষি।