ওসমানীনগরে যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাবা-ছেলের অস্বাভাবিক মৃত্যু এবং একই পরিবারের অপর ৩জনের অচেতন হওয়ার কোন ক্লু উদ্ধার হয়নি এখনো। ঘটনার পর ২৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও রহস্যে আবৃত রয়েছে বিষয়টি।বিষয়টির অধিকতর তদন্তের জন্য আজ ২৭ জুলাই বেলা আড়াইটায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশের সিলেট রঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ। তার সাথে ছিলেন সিলেটের পুলিশ সুপার (পদোন্নতি প্রাপ্ত ডিআইজ) ফরিদ উদ্দিন।
এসময় খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন তাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান অরুনোদয় পাল ঝলক ও স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ।হাসপাতালে চিকিৎসারত প্রবাসীর স্ত্রী হুসনে আরা বেগম ও ছেলে ছাদিকুল ইসলাম এর জ্ঞান ফিরেছে তবে তারা স্বাভাবিক নয়।একমাত্র মেয়ে সামিয়া বেগম এখনো হাসপাতালের আইসিউতে রয়েছেন।পুলিশ ঘটনার সাথে সাথে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রবাসীর শ্যালক দিলোয়ার হোসেন ও শ্যালকের স্ত্রী সুবা বেগ কে আটক করে থানায় রেখেছে।
ঘটনার দিন রাতে পুলিশ সিলেট শহর থেকে নিহতের অপর শ্যালক সেবুল আহমদ কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দিয়েছে। এদিকে ময়না তদন্তের পর হিমঘরে মৃত রফিকুল ইসলাম ও তার ছেলে মাইকুল ইসলামের লাশ রাখা হয়েছিল। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আজ বিকালে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে এসছেন মরহুম রফিকুল ইসলামের ভাই শফিকুল ইসলাম,বিজেকুল ইসলাম ও বোন শাহিনা বেগম। পারিবারিক সিদ্ধান্তের পর তাদের দাফন কার্যক্রম সম্পন্ন হবে।
উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডিআইজ মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ সুপারসহ পি আই বি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বিষয়টির অধিকতর তদন্তের জন্যই তিনি আজ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ইতোমধ্যে মৃতদের ময়নাতদন্ত কার্যকত্রম সম্পন্ন হয়েছে। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎকদের নিয়ে বিষয়টির তথ্য উদঘাটনের জন্য মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। বিষক্রিয়া না অন্য কিছু তা খতিয়ে দেখবার জন্য ভিসেরা প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। আপাতত পুলিশ অপমৃত্যু মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। পুলিশের কাছে কিছু তথ্য এসেছে তবে তদন্তের স্বার্থে তা বলা যাচ্ছেনা।
প্রসঙ্গত গত ১২ জুলাই যুক্তরাজ্য থেকে ছেলের চিকিৎসার জন্য পরিবারের ৫ সদস্য নিয়ে বাংলাদেশে আসেন উপজেলার দয়ামীর ইউনিয়নের কাতিপুর গ্রামের আব্দুল জব্বারের ছেলে রফিকুল ইসলাম। এক সপ্তাহ ঢাকায় ছেলের চিকিৎসা শেষে গত ১৮ জুলাই উপজেলার তাজপুর রবিদাসস্থ স্থানীয় চেয়ারম্যান অরুনোদয় পাল ঝলকের বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে উঠেন তারা। ২৭ জুলাই সকাল ১০টায় তাদের নাস্তার জন্য শয়ন কক্ষের দরজায় ডাকাডাকি করলে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।
এরপর পুলিশের উপস্থিতিতে শয়ন কক্ষের দরজা ভেঙ্গে অচেতন অবস্থায় এলোমেলোভাবে তাদের পাওয়া যায়। এখান থেকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে বাবা ছেলেকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। অপর অচেতন মা, ছেলের জ্ঞান ফিরলের বর্তমানে মেয়ে সামিয়া অচেতন অবস্থায় হাসপাতালের আইসিউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।