নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা উপজেলার নারান্দিয়া গ্রামের সাইদুরের স্ত্রী বিউটি মানব পাচারকারী দালালের প্রলোভনে ওমানে আড়াই মাস অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়ে অবশেষে সর্বস্ব হারিয়ে দেশে ফিরে এসেছে এবং দালাল চক্রের ৬ সদস্যের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে মানব পাচার ট্রাইব্যুনাল আইনে মামলা দায়ের করেছে।
জানা যায়, নারান্দিয়া গ্রামের সাইদুরের স্ত্রী বিউটি তার স্বামীর সাথে পরামর্শ করে নিজেদের সংসারের অভাব ও পরিবারের সদস্যদের একটু সাচ্ছন্দে রাখার প্রত্যাশায় প্রতিবেশী দুই জন সহযোগী আব্দুর রহমান (৬০) ও মেওয়া বেগম (৫০) এদের মাধ্যমে ওমানে যাওয়ার জন্য দুই লক্ষ টাকার চুক্তি করে। চুক্তি করার পর তাদের পরামর্শক্রমে পার্টপোর্ট, ওমানে যাওয়ার আনুষাঙ্গিক কার্যক্রম, এমনকি চুক্তির টাকা প্রদান সহ যাবতীয় কাজ সম্পাদন করে।
কাজ সম্পাদন শেষে বিগত ৫ এপ্রিল ২০২১ তাকে ওমানে পাঠায়। বিমান বন্দরে আব্দুর রহমান তাকে রিসিভ করে এবং তার বাসায় তাকে নিয়ে যায়। দুই তিন দিন পর সে মানব পাচারকারী একটি দলের কাছে বিক্রি করে দেয়। মানব পাচারকারী এই দল তাকে একটি তার অজ্ঞাত স্থানের একটি বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে দুই তিন জন লোক তাকে অমানুষিক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে, যা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।
হঠাৎ একদিন আব্দুর রহমান তার কাছে গিয়ে জানায় আমাকে আরো এক লক্ষ টাকা দিলে আমি তোমাকে একটি ভাল চাকুরীর ব্যবস্থা করে দিতে পারব। অবশেষে নিরুপায় হয়ে এবং একটি চাকুরীর প্রত্যাশায় দেশে ফোন করে জানালে তারা আরও এক লক্ষ টাকা দেয়। মানব পাচারকারী দালাল চক্রের সদস্য আব্দুর রহমানের প্রলোভনে ওমানে আড়াই মাস অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়ে অবশেষে সর্বস্ব হারিয়ে দেশে ফিরে দালাল চক্রের ৬ সদস্যের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে মানব পাচার ট্রাইব্যুনাল আইনে মামলা দায়ের করেছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়,পূর্বধলা উপজেলার পাইলাটি গ্রামের ওমান প্রবাসী আব্দুর রহমানের স্ত্রী মেওয়া আক্তার, প্রতিবেশী কালাম, রাশিদ,হেলিম, মামুন দরিদ্র বিউটিকে বিভিন্ন প্রলোভনের মাধ্যমে ২ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ওমানে পাঠায়। ওমান পৌছলে দালাল চক্রের অমানুষিক নির্যাতন ও আব্দুর রহমান ভাল চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে আরো ১ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়।দীর্ঘ আড়াই মাস অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়ে কৌশলে বিউটি এক বাংলাদেশীর সহযোগিতায় দেশে ফিরে আসে।
এ ব্যাপারে আদালতে মামলা দায়ের করলে বিজ্ঞ বিচারক মামলাটি পূর্বধলা থানায় তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্তের পর পূর্বধলা থানা পুলিশ সাক্ষ্য গ্রহন করে গত ২৪/০৮/২০২১ বিবাদীদের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। আসামী এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়নি।