চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযু্িক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এর মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেছেন, “একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালির জাতিসত্ত্বাকে বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। ভাষার জন্য রক্তদান পৃথিবীতে বিরল ইতিহাস। একুশে ফেব্রুয়ারির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিকে সার্বজনীন করতে হলে বিশ্বের সকল ভাষার প্রতি সম্মান দেখাতে হবে। বাংলা ভাষাকে সর্বস্তরে ছড়িয়ে দিতে চুয়েটে আমাদের গবেষণা প্রকাশনা ও অ্যাবস্ট্রাক্টগুলো বাংলায় প্রকাশ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে আমাদের শিক্ষকগণ বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
চুয়েট ন্যাচারাল ল্যাংগুয়েজ ল্যাবের সাহায্যে প্রযুক্তির মাধ্যমে বাংলা ভাষার ব্যবহার ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের সবাইকে একুশের চেতনা ধারণ করার পাশাপাশি বাংলা ভাষার ব্যবহারের প্রতি আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। তবেই ভাষার প্রতি ও ভাষা শহিদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হবে।” তিনি আজ ২১শে ফেব্রুয়ারি (সোমবার) ২০২২ খ্রি. চুয়েট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের পাদদেশে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
চুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সুনীল ধর, পুরকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মইনুল ইসলাম, তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মশিউল হক, স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল হাছান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. ফারুক-উজ-জামান চৌধুরী। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিভাগীয় প্রধানগণের পক্ষে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. স্বপন কুমার রায়, প্রভোস্টগণের পক্ষে শহীদ মোহাম্মদ শাহ হলের প্রভোস্ট ও মুজিববর্ষ বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. রণজিৎ কুমার সূত্রধর, স্টাফ ওয়েলফেয়ারের সভাপতি অধ্যাপক ড. জামাল উদ্দিন আহাম্মদ,
শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. আবু সাদাত মুহাম্মদ সায়েম, কর্মকর্তা সমিতির সাধারণ সম্পাদক জনাব মোহাম্মদ হারুন, স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জনাব মো. জামাল উদ্দিন এবং শিক্ষার্থীদের পক্ষে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের আতাউল্লাহ ও পুরকৌশল বিভাগের হামিদা বিনতে মান্নান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. সম্পদ ঘোষ এবং উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) জনাব মোহাম্মদ ফজলুর রহমান। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিশু-কিশোররা স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে মহান ভাষা শহিদদের স্মরণে দোয়া ও মুনাজাত পরিচালনা করেন চুয়েট কেন্দ্রীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ ক্বারী মাওলানা নুরুল্লাহ।
এর আগে মহান শহিদ দিবস উপলক্ষ্যে দিনের প্রথম প্রহরে সকাল সাড়ে ৭টায় ক্যাম্পাসের উত্তর গোল চত্ত্বর হতে প্রভাতফেরীর মাধ্যমে দিনব্যাপী কর্মসূচীর শুরু হয়। এতে নেতৃত্ব দেন মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম। এরপর চুয়েট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ করা হয়। পরে ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম।
এ সময় সাথে ছিলেন রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. ফারুক-উজ-জামান চৌধুরী ও মুজিববর্ষ বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. রণজিৎ কুমার সূত্রধর। পরে ডিনবৃন্দ, পরিচালক-বিভাগীয় প্রধান-সেন্টার চেয়ারম্যানবৃন্দ, ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ও হল প্রভোস্টবৃন্দ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী সমিতিসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এছাড়া একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষ্যে ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের সহযোগিতায় শিক্ষার্থীদের জন্য ‘উচ্চশিক্ষায় মাতৃভাষার প্রচলন’ বিষয়ে এবং স্টাফ ওয়েলফেয়ারের সহযোগিতায় “মুজিববর্ষ, শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস” বিষয়ে পৃথক রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।