মিঠাপুকুরের চেংমারী ইউনিয়নের কুমরপুর গ্রামের মৃত. বায়তুল্লাহ তালুকদারের ছেলে দিনমজুর শাহজাহান মিয়া। সম্প্রতি আবাসিক সংযোগের জন্য আবেদন করেন রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১’এ। ফরমুদেরপাড়া গ্রামের ইলেক্ট্রিশিয়ান রতন মিয়ার মাধ্যমে বাড়ির ওয়্যারিং করে নিয়েছেন তিনি। নতুন সংযোগের জন্য রংপুর পবিস-১ হতে মিটার ও ড্রপতার ইলেক্ট্রিশিয়ান আতাউর রহমানের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেন কর্তৃপক্ষ। সংযোগ প্রদানকালে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মর্মান্তিক মৃত্যু হয় আতাউর রহমানের। গতকাল মঙ্গলবার সকালে আতাউর রহমানের লাশ দাফন করা হয়েছে। নিহত ইলেক্ট্রিশিয়ান আতাউর রহমান ময়েনপুর ইউনিয়নের কাশিমপুর মধ্যপাড়া গ্রামের মোক্তার মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ এনে রংপুর পবিস-১ এর কর্তা ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি করেছেন।
গতকাল মঙ্গলবার ঘটনাস্থল কুমরপুর গ্রামের এলাকাবাসির সাথে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার বিকেলে সংযোগ প্রত্যাশি শাহজাহান মিয়ার বাড়িতে মিটার ও ড্রপতার নিয়ে আসেন ইলেক্ট্রিশিয়ান রতন মিয়া ও আতাউর রহমান। আতাউর ঘরের দেয়ালে মিটার লাগিয়ে সংযোগ দেওয়ার জন্য বৈদ্যুতিক খুটিতে ওঠেন। সংযোগ প্রদান করার আগেই তিনি খুটিতে থাকার উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তারে স্পর্শ লেগে যায়। দুলিয়ে পড়ে যান আরেকটি বৈদ্যুতিক তারের উপর। এতে, ঘটনাস্থলেই মারা যান আতাউর রহমান। ৪নভেম্বর মঙ্গলবার সকাল ১০টায় পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সান্তনা বেগম বলেন, পল্লী বিদ্যুতের দু’জন লোক মিটার ও ড্রাপতার নিয়ে আসেন। আতাউর নামে একজন খুটিতে ওঠেন সংযোগ দিতে। হঠাৎ বিকট শব্দ হয়, আতাউর তারের উপর ঝুলিয়ে পড়েন। সেখানেই তার মৃত্যু হয়েছে। আরেক প্রত্যক্ষদর্শী সাহেব আলী বলেন, যে খুটি হতে সংযোগ প্রদান করার কথা, সেটির পাশে আরেকটি খুটির তার ঝুলিয়ে ছিল। সেই তারের সাথে লেগেই সে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু ঘটে। এলাকাবাসী মুকুল মিয়া বলেন, সংযোগ দেওয়ার জন্য লাইনম্যান আসার কথা। কিন্তু, কর্তৃপক্ষ পাঠিয়েছে ইলেক্ট্রিশিয়ানকে। তারা মিটার ও ড্রপতারসহ অন্যান্য সরঞ্জাম সাথে নিয়ে এসেছিল। এই মৃত্যুর জন্য রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ কর্তৃপক্ষ দায়ী।
নিহত আতাউর রহমানের পরিবারের দাবি, আতাউর ইলেক্ট্রিশিয়ান কিন্তু পল্লী বিদ্যুতের লোকজন তাকে লাইন লাগাতে পাঠাত। তার মৃত্যুর জন্য পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ দায়ী। আমরা বিচার চাই। এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর কার্যক্রমের কোন ঠিক ঠিকানা নাই। বেশিভাগ জায়গায় লাইনম্যানের কাজ করেন ইলেক্ট্রিশিয়ান। কোন তদারকি নেই কর্তৃপক্ষের। রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জেনারেল ব্যবস্থাপক হরেন্দ্রনাথ সাহা বলেন, আতাউর রহমান মাঝে মাঝে আমাদের লোকজনের সাথে লেবার হিসেবে কাজ করেন। সেদিন সে বাইপাস করে গেছে। মাঝে মাঝে এরকম অনেক ঘটনা ঘটে।