ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইল উপজেলার অরুয়াইল বাজারে সরকারি জায়গা দখল করে দোকান ঘর নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে। প্রশাসন নিবর থাকার কারণে স্থানীয়দের মাঝে এক ধরনের চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দখলের এ দৃশ্য বহু আগের। অরুয়াইল নদী দিয়ে ঘেরা মধ্যে খানে বাজারটি। পাকশিমুল ও অরুয়াইল নদীর মধ্যে ব্রীজের পুর্ব পাশে পাকশিমুল ইউনিয়ন ব্রিজের পশ্চিম পাশে অরুয়াইল বাজার। দখল হয়েছে অরুয়াইল ব্রিজের নিচ থেকে শুরু করে এমন সরকারি জায়গা নেই যে দখলদাররা দখলের বাকি রেখেছে।
নদীর পাড়, সরকারি গণ ঘাটলা, মহিলা মার্কেট, কলেজের সামনের জায়গা, বাজারের ভিতরে চলাফেরা রাস্তায় নতুন করে দখল করে দোকান নির্মাণ যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ ফেসবুকে দখলের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের অরুয়াইল দক্ষিণ বাজারের প্রবেশ দ্বারে পূর্ব পার্শে নির্মাণ করা হচ্ছে অবৈধ দোকান।ইতিমধ্যেই দোকান ঘর নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন, কলেজের সামনে বাজারের প্রবেশ পথে সড়কের পূর্ব পাশে সরকারি জায়গা দখল করে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ইট দিয়ে পাকা স্থাপনা তৈরী করছে। সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা মূল্যর এই সম্পত্তি বেদখল হচ্ছে।
আমরা তাদের সম্পর্কে তেমন কিছু বলতে পারিনা তাদের সাথে ক্ষমতাশালী একাধিক ব্যক্তির সখ্যতা রয়েছে। বাজারে একাধিক ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের সাথে কথা হলে তারা বলেন,অরুয়াইল বাজার এলাকায় সরকারি যতো সম্পত্তি ছিল সবই দখল হয়েছে। সরকারি কর্তাব্যক্তিরা লাল নিশান বা কোন দোকানে লাল চিহ্ন দেওয়া হয়। তখন আর বাকী থাকেনা যে এই জায়গা বা দোকান সরকারি কি না। এতো কিছুর পর ও আজ পর্যন্ত অবৈধ দখলের বিরুদ্ধে কোন উচ্ছেদ অভিযান দেখি নাই।নদী রক্ষা কমিশনের কথা আরোও বছর পার। আমরা বলে কি হবে রিপোর্ট হলে দুয়েক দিন কর্তাব্যক্তিরা বাজারে লাম্বা ফিতা নিয়ে আসবে। আর দুই একদিন পর যারা দখল করছে তারা অফিসে দেখা করে সবই শেষ।
এ দখলের কিছু হবে না। ৮০বছরের উর্ধ্বে হাজী নুর মিয়া বলেন, অরুয়াইল বাজারের সরকারি জায়গা দখল করেছে এই দখলের উচ্ছেদ চাই। দখলের রাজত্বের অবসান চাই, তাহলেই বাজারে শান্তি ফিরে আসবে। সরকারি জায়গা প্রশাসনের মাধ্যমে উচ্ছেদ অভিযান চাই। অরুয়াইল ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, ঈদের মধ্যে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত ছিলাম তাই বাজারের এ রাস্তায় কে বা কারা দোকান টি নির্মাণ করেছে আমি তার তিব্র নিন্দা জানাই। আমি চেয়ারম্যান হিসেবে বলতে চাই অতি দ্রুত এই দোকানটি এখান থেকে পরিষ্কার করতে হবে। তা না হলে প্রশাসনের মাধ্যমে সরকারি জায়গায় অবৈধভাবে দোকান করার জন্যে জরিমানা দিতে হবে।
চেয়ারম্যান এ সময় আরো বলেন, বাজারে ৩১ টি দোকান ভিট এবং নদীর পাড় সহ২ শত কোটি টাকার সরকারি জায়গা বিভিন্ন লোকজন দখল করে রেখেছে।প্রশাসন লাল(×) চিহ্ন দেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান বলেন, এটি একটি হাস্যকর বিষয়, লোক দেখানো, এই পর্যন্ত কয়েকবার এই ক্রস চিহ্ন দেওয়া হয়েছে।কিন্তু এই ব্যাপারে লোকজন আমাকে বলে এই ক্রসিংয়ের কি হলো। আমি এখনো পর্যন্ত কোন জবাব দিতে পারিনা। আমি একটা বিষয় এখনো বুঝতে পারিনা কি এমন এক অদৃশ্য কারণে অরুয়াইল বাজারের অবৈধ স্থাপনা উপরে প্রশাসনের লোকজন এসে লাল(×) চিহ্নিত করে যায়। কিন্তু সরকারি জায়গা উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করতে আর আসে না।
তবে আপনাদের তথ্য সত্যি হয়েছে আমি আজ নিজে দেখেছি রাস্তার মাঝে এ নতুন দোকানটি। তবে এটার সাথে যারা জড়িত আমি তাদের বিচার দাবি করছি। অরুয়াইল ঘুরে জানা যায়, অরুয়াইলে নদীসহ দখল হুয়া সরকারি জায়গা উদ্ধারে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা লিখিত ভাবে পদক্ষেপ নিলেও তা কোনো কার্যকর হয়নি আজও পর্যন্ত। এখন সরকারি জায়গা উদ্ধার না হয়ে নতুন করে নদীর জায়গা দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্টানে দোকান মার্কেট তৈরির কাজ চলছে গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়।
এদিকে তথ্য সুত্রে জানান, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন নং ১৮,২০,০০০০ ,০১৮ ,০৬,০০১,১৫,(২৪) অং-১-১১০৭। বিষয়: ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাধীন সরাইল উপজেলা অরুয়াইল বাজার সংলগ্ন তিতাস নদী এবং সংযুক্ত অবৈধ দখল উচ্ছেদ এবং দুষণরোধ কল্পে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন বরাবর লিখিত অভিযোগ কারী আবু বকর সিদ্দিকের সাথে কথা হলে তিনি হাতে একটি নদী কমিশনের চিঠি দেখিয়ে বলেন, আমি জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনে আবেদন করলে কমিশনের সচিব অরুয়াইল বাজারে তিতাস নদী ও খালের অবৈধ দখল উচ্ছেদ করতে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলে। সরাইল প্রশাসনের কয়েক জন এসে দেখে গেছে আজ পযর্ন্ত কোন ব্যবস্হা নিতে কেউ আসেনি।
তিনি বলেন,আইন’তো আছে কাগজে ! বাস্তবায়ন নাই মাঠে ‘ আছে আরো দখল?এ ব্যপারে সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.আরিফুল হক মৃদুল বলেন,দোকান ঘর বাজারের জায়গা নির্মাণ করার কথা শুনেছি, নির্মাণ কাজে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অবৈধ স্থাপনায় লাল চিহ্নের বিষয়ে ইউএনও বলেন, সরকারি জায়গা চিহ্নিত করে জেলা প্রশাসন অফিসও নদী রক্ষা কমিশনারের নিকট প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।সরকারি নিদর্শনা আসলেই বাস্তবায়ন করা হবে।