পাঁচ দফা দাবি আদায়ের লক্ষে আমরণ অনশনে বসা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) শাখা ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির চার নেতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসাশনের আশ্বাসে অনশন স্থগিত ঘোষণা করেছে। সোমবার (২০ মার্চ) বিকাল সাড়ে তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবির ও ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান নেতাকর্মীদের পানি পান করিয়ে তাদের অনশন ভাঙ্গান।
অনশনের বিষয়ে জানতে চাইলে অনশনকারীদের একজন সালমান চৌধুরী বলেন, ‘প্রশাসন আমাদের আশ্বাস দিয়েছে যে আমাদের দাবি দাওয়া তারা পূরন করবে সেই কারনেই আমরা অনশন ভেঙ্গেছি। আমাদের দুজনজের (এনায়েত উল্লাহ ও সালমান চৌধুরী) উপর যে বহিষ্কার আদেশ ছিলো সেটা সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে।
আমরা এখন ক্লাস পরীক্ষা দিতে পারবো। আমরা সেদিনই সন্তুষ্ট হবো যেদিন আমাদের পাঁচ দফা দাবিগুলোর দৃশ্যমান বাস্তবায়ন হবে।’বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, ‘তারা যদি আমার বিরুদ্ধে কোন প্রমাণ দেখাতে পারে তাহলে আমি নিজেই পদত্যাগ করবো। তাদের যে দাবি দাওয়া ছিলো সেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন মেনে বাস্তবায়ন করা হবে। এখন থেকে হলে সন্ধ্যাকালীন কোর্সের কেউ থাকতে পারবে না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন এই ব্যাপারে বলেন, ‘এখন থেকে ক্যাম্পাসে অছাত্র কেউ প্রবেশ করতে পারবে না সকলকেই আইডি কার্ড দেখিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে হবে। দুজন শিক্ষার্হীকে যে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছিল তা সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।
পরবর্তীতে তদন্ত কমিটি গঠন করে সিন্ডিকেটে তদন্ত রিপোর্ট পেশ করা হবে এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া প্রক্টরের বিরুদ্ধে যে মৌখিক অভিযোগ এনেছিলো তারা সে ব্যাপারে যদি কোন ডকুমেন্টস নিয়ে আসতে তাহলে আমি অবশ্যই এর ব্যাবস্থা নিবো।
এর আগে গত ৮ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এক মসজিদের সামনে মারধরের শিকার হন শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত উল্লাহ ও একই হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সালমান চৌধুরী। পরবর্তীতে ক্যাম্পাসে পাঁচ ঘণ্টা অবস্থান করে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে গিয়ে দের ঘন্টা রাস্তা অবরোধ করে রাখেন মারধরের বিচারের দাবিতে।
এরপর গত ৯ মার্চ ও ১৪ মার্চ সংবাদ সম্মেলন করে ছয়দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল। সর্বশেষ গত ১৯ তারিখ সংবাদ সম্মেলন করে আমরণ অনশনের ঘোষণা দিয়ে একই দিন বিকাল চারটায় আমরণ অনশনে বসে।
উল্লেখ্য, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির নেতাকর্মীরা পাচ দফা দাবি আদায়ে নানা কর্মসূচি পালন করে।
পাঁচ দফা দাবিগুলো হলো- প্রক্টরের পদত্যাগ, হামলাকারীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার ও বিশ্ববিদ্যালয় বাদী হয়ে মামলা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আইনি পরামর্শক নিয়োগ করতে হবে। একই সঙ্গে অছাত্র, বহিরাগত ও একাধিক মামলার আসামিদের হলে ওঠা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর (এনায়েত উল্লাহ ও সালমান চৌধুরী) সাময়িক বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার এবং বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকল স্তরের স্টেকহোল্ডারদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা প্রদান।