২০১৪ সালের ১২জুন তারিখে কুমিল্লায় পরিবহন নেতা রেজাউল করিম (রাজা মিয়া) তার নিজ বাড়িতে খুন হয়। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মোঃ খাজা মিয়া (৪৮) বাদী হয়ে ১৪ জুন ২০১৪ ইং দাউদকান্দি থানায় অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর পরই দাউদকান্দি থানা পুলিশ নিহতের স্ত্রী আলো আক্তারকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
জিজ্ঞাসাবাদে আলো আক্তার উক্ত হত্যাকান্ডে তার নিজের ও দুই সহযোগী তাপস চন্দ্র শীল ও মোঃ রাসেদ এর সম্পৃক্ততা স্বীকার করে। পরবর্তীতে নিহতের স্ত্রী আসামী আলো আক্তারকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করলে বিজ্ঞ আদালতে সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে যার প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করে জেল হাজতে প্রেরণ করে। এর প্রায় ০৩ বছর পর ২০১৭ সালের মার্চ মাসে বর্ণিত আসামী জেলখানা থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে আত্নগোপন করে।
পরবর্তীতে সে নারায়ণগঞ্জে চলে আসে এবং নিজের আসল পরিচয় গোপন করে ঢাকার বিভিন্ন এলাকাসহ, নারায়ণগঞ্জের পঞ্চবুটি, বিসিক শিল্প এলাকার বিভিন্ন গার্মেন্টস কারখানায় পোষাক শ্রমিক হিসেবে চাকুরী করতে থাকে। উল্লেখ্য যে, গ্রেফতার এড়ানোর জন্য সে এক কারখানায় বেশিদিন কাজ করতো না এবং বারংবার চাকুরীস্থল পরিবর্তনের মাধ্যমে সে আত্নগোপন করে আসছিল। এভাবে প্রায় ০৬ বছর আত্নগোপনে থাকার পর সর্বশেষ সে নারায়ণগঞ্জ হতে ঢাকায় চলে আসে এবং রামপুরাস্থ উলন এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় উঠে আত্নগোপন করতে থাকে।
উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে গত ১২ এপ্রিল ২০২৩ইং তারিখ কুমিল্লা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৫ম আদালত গ্রেফতারকৃত আসামী আলো আক্তার ও অন্য দুই আসামীকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করেন। পরবর্তীতে র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লার একটি আভিযানিক দল উক্ত ঘটনার পরিকল্পনাকারী ও হত্যাকারী নিহতের স্ত্রী আলো আক্তারকে গ্রেফতারের নিমিত্তে মাঠ পর্যায়ে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
গোয়েন্দা তথ্য-উপাত্ত ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় উক্ত আসামীকে শনাক্তপূর্বক অদ্য ২১ এপ্রিল ২০২৩ইং সকালে ডিএমপির হাতিরঝিল থানাধীন পশ্চিম রামপুরার উলন এলাকা হতে হত্যা মামলার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী মোসাঃ আলো আক্তার (৪৪), পিতা- আব্দুল আওয়াল, মাতা- কমলা বেগম, সাং- দক্ষিন সতানন্দি, পোঃ- দাউদকান্দি-৩৫১৬, দাউদকান্দি পৌরসভা, থানা- দাউদকান্দি, জেলা- কুমিল্লা’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
উক্ত বিষয়ে গ্রেফতারকৃত আসামীকে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি মডেল থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন।