কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় চলতি মৌসুমে সোনালী ফসল নামে পরিচিত পাট এর উৎপাদন আশানুরূপ হওয়ায় ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে আশাবাদী কৃষকেরা।কৃষকদের মুখে হাসির ঝিলিক।সোনালী আঁশের স্বপ্ন বুনছেন কৃষকেরা।কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে,ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় কমে যাওয়া পাট চাষে ঝুঁকছেন কৃষকেরা।প্রতি বছরই বৃদ্ধি পাচ্ছে পাটচাষ।
এক সময় ব্যাপক হারে পাটের চাষ করা হলেও গত প্রায় দশ বছর থেকে নানা কারণে পাটের আবাদ করা থেকে বিরত ছিল কৃষকেরা।অনেকে মনে করেন পলেথিন জাতীয় জিনিসের কদর বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে পাটজাত দ্রব্যাদির ব্যবহার কমে গিয়েছিল।বর্তমানে পলেথিনের ব্যবহার সরকারী ভাবেই নিষিদ্ধ হবার কারণে পাটের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে।পাট বর্তমানে দুই হাজার থেকে দুই হাজার পাঁচশ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানা গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়,ব্রাহ্মণপাড়ায় চলতি মওসুম এক হাজার হেক্টর জমিতে পাটের চাষাবাদ করা হয়েছে।পাটে তেমন কোন পোকা-মাকড়ের উপদ্রব দেখা না দেয়ায় এবং মাঝে মাঝে বৃষ্টির পানি হবার কারণে পাট গাছের সতেজতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং কিছু কিছু জমির পাট কাটা ও ধুয়ার কাজ চলছে।
কৃষকদের সাথে কথা হলে তারা জানান,এখন পর্যন্ত পাটের আবাদ ভাল হয়েছে।এক বিঘা জমিতে পাট চাষ করতে প্রায় সাত থেকে আট হাজার টাকা খরচ হয় বলে জানা গেছে।পাটের বাজারদর ভাল থাকলে কৃষকরা আর্থিক ভাবে অধিক লাভবান হতে পারবেন।
উপজেলার চান্দলা ইউনিয়নের চারিপাড়া গ্রামের পাট চাষি আব্দুল আলীম জানান,তিনি এবার চার বিঘা জমিতে পাট চাষ করছেন।পাটগাছের অবস্থা আশানুরূপ ভাল।একই এলাকার আব্দুল মজিদ চার বিঘা, আব্দুল খালেক তিন বিঘা জমিতে পাট বপন করেছেন।
তারা জানান,বপনের পর থেকেই গাছের চেহারা দিন দিন ভাল অবস্থায় রয়েছে।একই গ্রামের কৃষক জাবের আলী জানান,পাট কাটার পর জাগ দেয়ার জন্য ঠিকমত পানি পেলে তেমন আর বেগ পেতে হবেনা।বিঘা প্রতি আট থেকে বারো মণ পর্যন্ত পাটের উৎপাদন হবে বলে কৃষকরা আশা প্রকাশ করছেন।
এ ব্যপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুবুল হাসান বলেন,বাঙালি জাতির ঐতিহ্যের সাথে জড়িয়ে থাকা পাট চাষ থেকে এক সময় কৃষকেরা মুখ ফিরিয়ে নিলেও দিন দিন এই উপজেলার কৃষকেরা আবারও পাট চাষে ঝুঁকছেন।কৃষকদের পাট চাষের জন্য সার্বিকভাবে সহযোগীতাও প্রদান করছেন বর্তমান সরকার।