শেরপুরে চলতি বছরের ২১ মার্চ ব্রহ্মপুত্র সেতুর টোল আদায়ের ইজারাদারের কাছ থেকে ৩৫ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই তুষার রঞ্জন দাস ওরফে রিপন (৪৩) নামে এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতার তুষার নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের হীরা লাল দাসের ছেলে। ৮ আগস্ট রোববার ময়মনসিংহ মহানগরের গাঙিনারপাড় এলাকা থেকে পিবিআই, জামালপুরের একটি দল তুষারকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ২১ মার্চ দুপুরে সড়ক ও জনপথ শেরপুর বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন ব্রহ্মপুত্র সেতুর টোল আদায়ের ইজারাদার নুর হোসেন ও তাঁর ভাতিজা লিটন রানা ইজারা মূল্যের কিস্তির ৩৫ লাখ টাকা ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড, শেরপুর শাখায় জমা দেওয়ার উদ্দেশ্যে সেতুর টোলঘর থেকে মোটরসাইকেল যোগে শেরপুর শহরে আসছিলেন। নুর হোসেনের ভাতিজা লিটন মোটরসাইকেলটি চালাচ্ছিলেন। নুর হোসেন ও লিটন শহরের প্রবেশমুখ শেরীপাড়া মিয়াবাড়ি এলাকায় এসে পৌঁছলে পাঁচ সদস্যের ছিনতাইকারী দল তাঁদের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে প্রথমে নিজেদের আইনের লোক বলে পরিচয় দেয়। এরপর ছিনতাইকারীরা মোটরসাইকেল চালক লিটনকে তাঁর ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের হ্যান্ডেলের সাথে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে ফেলে। এ সময় নুর হোসেন প্রতিবাদ করলে ছিনতাইকারীরা তাঁর (নুর হোসেন) চোখে মরিচের গুড়া ছিটিয়ে তাঁর কাছে থাকা ৩৫ লাখ টাকাসহ টাকার ব্যাগটি ছিনিয়ে নেয় এবং দুটি মোটরসাইকেল যোগে দ্রুত পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ছিনতাইয়ের শিকার নুর হোসেন বাদী হয়ে ঘটনার দিনই অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা করেন।
গ্রেফতারকৃত তুষার সোমবার বিকেলে শেরপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহসিনা হোসেন তুষির আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। পরে আদালতের নির্দেশে তাঁকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। পিবিআই, জামালপুরের পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. মোখলেছুর রহমান সোমবার বিকেলে এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান বলেন, আদালতে দেওয়া জবানবন্দীতে গ্রেফতার তুষার রঞ্জন দাস বলেন, ছিনতাইয়ের মূল পরিকল্পনাকারীসহ তাঁরা পাঁচজন ছিনতাই কাজে অংশ নেন। মূল পরিকল্পনাকারীর বাড়ি শেরপুর সদরে। ঘটনার সময় মূল পরিকল্পনাকারী ঘটনাস্থলের অদূরে একটি প্রাইভেট কারে অবস্থান করছিলেন। টাকা নিয়ে আসার ঘটনাটি মূল পরিকল্পনাকারী আগে থেকেই জানতেন। সে অনুযায়ী ঘটনার দিন ও সময়ে টাকাবহনকারী দ্ইুজনের মোটরসাইকেল আটকিয়ে ও তাঁদের চোখে মরিচের গুড়া ছিটিয়ে টাকার ব্যাগ ছিনতাই করে নিয়ে তাঁরা দ্রুত পালিয়ে যান।
তদন্ত কমৃকর্তা বলেন, মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন আছে। তাই তদন্তের স্বার্থে ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের নাম প্রকাশ করা সম্ভব নয়।