মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার সুজানগর ইউনিয়নের একটি সদর রাস্তার এইচবিবিকরণ কাজ প্রায় এক বছর ধরে ফেলে রেখেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কার্যাদেশ অনুযায়ি গত বছরের ১৫ জুন কাজ সমাপ্তির মেয়াদ শেষ হয়। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এখন পর্যন্ত প্রকল্প সাইটের ৫ ভাগ কাজও সম্পন্ন করেনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুনজিত কুমার চন্দ নির্মাণ কাজ সমাপ্তের জন্য ইতিমধ্যে দুই দফা তাগিদপত্র পাঠালেও ঠিকাদার তাতে কর্ণপাত করেননি। রাস্তাটির বক্সকাটিং করে মাঝপথে ঝুলিয়ে রাখায় দীর্ঘদিন ধরে এই রাস্তায় চলাচলকারি সুজানগর ও বড়লেখা সদর ইউনিয়নের ১০-১২ গ্রামের অন্তত ২৫ হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
জানা গেছে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শাখা ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে গ্রামীণ মাটির রাস্তা সমূহ টেকসই করণের লক্ষ্যে হেরিং বোন বন্ড (এইচবিবি) করণ (২য় পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সুজানগর ইউনিয়নের পূর্ব পাটনা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আফতাব উদ্দিনের বাড়ি হতে কটালপুর পাকা রাস্তা পর্যন্ত ১ হাজার মিটার রাস্তার নির্মাণ কাজের জন্য প্রায় ৬৩ লাখ টাকার প্রকল্প গ্রহণ করে।
গত বছরের ১৫ জুনের মধ্যে নির্মাণ কাজ সম্পন্নের চুক্তিতে রাস্তাটির কার্যাদেশ পায় আকসা কনষ্ট্রাকশন নামক বড়লেখার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কার্যাদেশ অনুযায়ি নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। প্রায় দেড় মাস আগে রাস্তাটির বক্সকাটিং করে সামান্য বালি ফেলে রাস্তাটির নির্মাণ কাজ মাঝপথে ঝুলিয়ে রাখায় এই রাস্তায় চলাচলকারি ১০-১২ গ্রামের অন্তত ২৫ হাজার মানুষজন চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
সরেজমিনে গেলে ভুক্তভোগি এলাকাবাসী আলী হোসেন, নানু মিয়া, আব্দুল কাদির, জুনেদ আহমদ, ইছবর আলী, ফখর উদ্দিন প্রমুখ জানান, রাস্তাটি সুজানগর ও বড়লেখা সদর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দার একমাত্র যাতায়াত মাধ্যম। আমাদের সংসদ সদস্য, পরিবেশ ও বনমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার জন্য রাস্তাটির উন্নয়নে বরাদ্দ প্রদান করেন। শুনেছি গত বছরের জুনে কাজ সমাপ্ত হওয়ার কথা। কিন্তু ঠিকাদার ৬-৭ মাস কোন কাজই করেনি।
প্রায় দেড় মাস আগে রাস্তাটির বক্সকাটিং করে সামান্য বালি ফেলে রেখেছে। এই অবস্থায় না চলছে গাড়ি, না চলা যাচ্ছে পায়ে হেঁটে। কাজ সমাপ্ত না করায় হাজার হাজার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বৃষ্টি পড়লে রাস্তাটি বেহাল অবস্থায় রূপ নেবে, তখন মানুষের ভোগান্তির সীমা থাকবে না।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. উবায়েদ উল্লাহ খান জানান, কার্যাদেশ অনুয়ায়ি প্রকল্পটির কাজ সম্পন্নের মেয়াদ প্রায় ৭ মাস আগে শেষ হয়েছে। কাজ সম্পন্নের জন্য গত ৩ নভেম্বর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্মাণ কাজ সম্পন্নের জন্য প্রথম দফা তাগিদপত্র দেওয়া হয়। সর্বশেষ ১০ জানুয়ারি কাজ সম্পন্নে চুড়ান্ত নোটিশ দেওয়া হয়। দ্রুত কাজ সম্পন্ন না করলে কার্যাদেশের শর্তাবলি ভঙ্গের দায়ে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধিকারি নোমান আহমদ জানান, বন্যাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রাস্তাটির জটিলতা ও উপকরণ (ইট) দুষ্প্রাপ্যতার কারণে নির্মাণকাজ সমাপ্তি বিলম্বিত হয়েছে। তবে গত মঙ্গলবার থেকে পুরোদমে কাজ শুরু করার কথা হলে বলেছিলেন দ্রুত সমাপ্ত করবেন।