যশোরের অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ফটকের সামনেই সনদ ছাড়া শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার পরিচয়ে কোন প্রকার নিয়ম নীতি না মেনে সংশ্লিষ্ট দফতরের অনুমোদন ছাড়াই প্রশাসনের নাকের ডগায় এ.বি ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টার নামে একটি প্রতিষ্ঠান নামিদামি ডাক্তারের প্রচার চালিয়ে রমরমা ব্যবসা পরিচালনা করছে প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী কথিত ডাক্তার ইজাজুল ইসলাম মামুন। তিনি নিজ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিজেকে শিশু বিশেষজ্ঞ পরিচয় দিয়ে নিয়মিত রোগী দেখে চিকিৎসাসেবা প্রদানের নামে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন বলে একাধিক অভিযোগ আছে।
তার কাছে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের তিনি কারনে অকারনে বিভিন্ন পরিক্ষা দিয়ে সেটা তার নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে করাতে বলেন। ডাগায়গনস্টিক সেন্টার চালু করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইসেন্স, ট্রেড লাইসেন্স, আয়কর প্রত্যয়নপত্র, ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন, অনাপত্তিপত্র, বর্জ্যপদার্থ অপসারণের চুক্তিপত্র, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স, শিল্প ও কলকারখানা প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স, প্যাথলজিস্ট, টেকনোলজিস্ট ও ডাক্তারের সম্মতিপত্র এবং ডাক্তারের সার্টিফিকেট নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের নামে এসব কাগজপত্র থাকার কথা থাকলেও ওই প্রতিষ্ঠানটি এসবের কিছুই দেখাতে পারেনি। ঘরের ভেতর আল্ট্রাসনোগ্রাম, ইসিজি, অ্যানালাইজার মেশিন থাকলেও সেখানে নেই কোন ডাক্তার।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী জোসনা বেগম অভিযোগ করে করে বলেন, গত মাসে আমার পাঁচ মাস বয়সি পুত্র সন্তান ইয়ামিনের ঠান্ডা জনিত সমস্যা দেখা দেয়। জানতে পারি এ.বি ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারে একজন শিশু বিশেষজ্ঞ নিয়মিত রোগী দেখছেন। আমি আমার সন্তানকে তার কাছে চিকিৎসার জন্য নিলে তিনি চিকিৎসা না দিয়ে বিভিন্ন পরিক্ষা দেয় এবং সেগুলো তার নিজের প্রতিষ্টান থেকে করতে বলে। আমি গরীব মানুষ, পরীক্ষা করানোর টাকা আমার কাছে না থাকায় আমি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার দেখাই, তাতেই আমার সন্তান সুস্থ হয়ে ওঠে।
গত ১ ডিসেম্বর কেয়া নামের একজন নারী একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেয়। বাচ্চাটির সামান্য ঠান্ডা জড়িত সমস্যা দেখা দিলে ইজাজুল ইসলাম মামুনকে দেখালে সে বাচ্চার নিউমোনিয়ার হতে পারে বলে ২ টা পরীক্ষা দিয়ে নিজের ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে করতে বলে। পরে দেখা যায় সামান্য ঠান্ডার সমস্যা।
কোন প্রকার অনুমতি ছাড়া ডায়াগনস্টিক সেন্টার কিভাবে চালাচ্ছে এমন প্রশ্নের উত্তরে এ.বি ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারের স্বত্বাধিকারী ও কথিত ডাক্তার ইজাজুল ইসলাম মামুন বলেন, আমি সব জায়গায় আবেদন করেছি। ডাক্তারি ডিগ্রী অর্জন না করে নিজেকে শিশু বিশেষজ্ঞ পরিচয় দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দেননি। সার্টিফিকেট আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি কোন সার্টিফিকেট না দেখিয়ে বলেন আমার একটা প্যারামেডিকেলের সার্টিফিকেট আছে।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ড. ওহিদুজ্জামান বলেন, ইজাজুল ইসলাম মামুন নামের কোন শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ও ওই নামে কোন ডায়াগনস্টিক সেন্টার আছে বলে আমার জানা নেই। সিভিল সার্জন আবু শাহীন বলেন, বিষয়টা খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।