মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার ১৪৮নং রায়পুর কাচারীকান্দি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ প্রভাবশালীদের দখলের অভিযোগ উঠেছে।এ দখলের ঘটনায় বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতির ভাইসহ স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি জড়িত রয়েছে বলেজানিয়েছেন এলাকাবাসী।বিদ্যালয়ের একমাত্র মাঠটি দীর্ঘদিন ধরে তাদের দখলে থাকায় শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এদিকে বিদ্যালয়ের জায়গা উদ্ধার করতে প্রশাসনের প্রতি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে বিদ্যালয়ের শিক্ষক,শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী।আজ শুক্রবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সরেজমিন সুত্রে জানা গেছে,উপজেলার এনায়েতনগর ইউনিয়নের রায়পুর কাচারিকান্দি গ্রামে ১৯৯৪ইং সালে বিদ্যালয় নির্মানের জন্য একই গ্রামের ইসমাইল সরদার ও তার স্ত্রী ময়মুন নেছা ২২ শতাংশ ও মনির সরদার ১১ শতাংশ জমি বিদ্যালয়ের নামে দলিল করে দেন।
পরে বিদ্যালয়ের জমিদাতা হিসেবে মনির সরদার দীর্ঘদিন বিদ্যালয়ের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।সম্প্রতি মনির সরদারকে শিক্ষাগত যোগ্যতার কারণে সভাপতির পদ থেকে বাদ দেয়া হলে তার ছোট ভাই আক্তার সরদার স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালীদের নিয়ে বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে মাটি কেটে ধান ও কলাগাছ রোপণ করেন।এতে করে বিদ্যালয়ের যাতায়াতের রাস্তা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।এবং স্কুলে আসা শিক্ষার্থীরা খোলা-ধুলাও করতে পারছেনা।
এ দখলের ঘটনায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ সোহরাব হোসেন জমি উদ্ধারের দাবীতে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল ইসলামের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।মাটি কাটার ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত আক্তার সরদার বলেন,আমার জমিতে আমি মাটি কাটতেছি এবং ধান ও কলাগাছ লাগিয়েছি।স্কুল যদি জমি পায় নেবে।আমরা পাঁচ ভাই-বোন।আমার ভাই দলিল দিলে তারটুকু দিতে পারে।আমাদের অন্য ভাই-বোনদের জমি দলিল দিতে পারে না।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ সোহরাব হোসেন বলেন,সাবেক সভাপতির ভাইসহ বেশ কয়েকজন মিলে বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে মাটি কেটে ধান ও কলাগাছ রোপন করেছে।তাই আমি আমার শিক্ষা অফিসারের কাছে গেলে তিনি ইউএনও স্যারের কাছে দরখাস্ত দিতে বলেন।পরে আমি সেখানে দরখাস্ত দিয়েছি।তখন ইউএনও স্যার তহশিলদারকে দিয়ে মাটি কাটার কাজ বন্ধ করে দেন।এবং দলিলপত্রসহ যাবতীয় কাগজ নিয়ে স্যারের কাছে যেতে বলেছেন।
কালকিনি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বদিউজ্জামান বলেন,বিষয়টি ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমাকে জানিয়েছেন।আমি তাৎক্ষণিক ওই ইউনিয়নের ভূমি কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।তারা বিষয়টি দেখে আপাতত মাটি কাটার কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন।এখন দিন-তারিখ ঠিক করে জায়গাটা পরিমাপ করলে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে।
এ ব্যাপারে কালকিনি ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন,রায়পুর কাচারীকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এসেছিলেন।আমি তহশিলদারকে পাঠিয়ে মাটি কাটার কাজ বন্ধ করেছি।বিদ্যালয়ের দলিল আনতে বলেছি।যারা দাবি করছে তাদেরও দলিল আনতে বলেছি।কার কি সমস্যা তা দেখে সিদ্ধান্ত নেব।আপাতত বেড়া ছাড়া যে জায়গা আছে,ওখান দিয়ে শিক্ষার্থীদের যাতায়াত করতে বলা হয়েছে।