কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার গোপিনাথপুর গ্রামের এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে ঔষধ খাইয়ে গর্ভের সন্তান মেরে ফেলার অভিযোগে প্রতারক প্রেমিক একই ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামের কামাল উদ্দিনের ছেলে নাজমুল হাসান প্রকাশ সবুজ (২৬) কে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর পিতার বুড়িচং থানায় দায়ের করেছে মামলা। প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ের প্রলোভনে একাধিকবার ধর্ষনের ঘটনায় ছাত্রীটি গর্ভবতী হয়ে পড়লে তাকে দু’দফা ঔষধ সেবন করে গর্ভের সন্তান নষ্টের চেষ্টা করেছিল এই প্রতারক প্রেমিক। গত ৯ ডিসেম্বর এঘটনায় তার পিতা ১০ ডিসেম্বর মামলা দায়ের করেছিল।
মামলার বিবরণে জানা যায়, জেলার বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের গোপিনাথপুর গ্রামের ওই মাদ্রাসা ছাত্রী আলীম প্রথম বর্ষে লেখাপড়া করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার সাথে পরিচয় হয় একই ইউনিয়নের গাজীপুর নোয়াপাড়া গ্রামের কামাল উদ্দিনের ছেলে লম্পট নাজমুল হাসান প্রকাশ সবুজের সাথে।এরই জের ধরে বিয়ের মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে সবুজ চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারী ও ৩০ মে তাকে যথাক্রমে ষোলনল ইউনিয়নের খাড়াতাইয়া গ্রামের মামুন মিয়ার স্ত্রী সালমা বেগম ও একই ইউনিয়নের গোপিনাথপুর মধ্যপাড়ার রেনু মিয়ার ছেলে কামাল হোসেনের ঘরে নিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দু’দফা ধর্ষন করে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে তাকে আরো বেশ ক’বার ধর্ষন করে। এতে সে গর্ভবতী হয়ে পড়ে।
এঅবস্থায় মাদ্রাসা ছাত্রীটি লম্পট প্রেমিককে বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করলে সে কিছুদিন পর বিয়ে করার কথা বলে উল্টো গর্ভের সন্তান নষ্টের জন্য চাপাচাপি করতে থাকে। পরবর্তীতে অসহায় ছাত্রীটি গত ৩ নভেম্বর প্রেমিকের মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে সরল বিশ্বাসে গর্ভের সন্তান নষ্টের জন্য একটি ঔষধ সেবন করে। গত ৮ ডিসেম্বর শারীরিক পরিবর্তন বাড়তে থাকলে ছাত্রীটি বুড়িচং মেডিকেল সেন্টার নামের একটি ক্লিনিকে গিয়ে প্রেগনেন্সি টেষ্ট করালে সেখান থেকে তাকে ৫ মাসের গর্ভবতী বলে জানানো হয়। এতে সে চিন্তিত হয়ে বিষয়টি সবুজকে আবারো জানালে গত ৯ ডিসেম্বর খাড়াতাইয়া গ্রামের সালমার ঘরে ডেকে নিয়ে ৪টি গর্ভপাতের ঔষধ সেবন করালে এক পর্যায়ে ছাত্রীটি একটি মৃত ছেলে সন্তান প্রসব করে।
এ অবস্থায় তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকলে কৌশলে বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। এসময় ছাত্রীটির পিতা খবর পেয়ে দ্রুত হাসপাতালে এসে বুড়িচং থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে নবজাতকের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। এদিকে পুলিশ এঘটনায় লম্পট প্রেমিক নাজমুল হাসান সবুজকে ওই দিনই গ্রেফতার করেছে। এব্যাপারে মাদ্রাসা ছাত্রীর পিতা বাদী হয়ে প্রেমিককে একমাত্র আসামী করে বুড়িচং থানায় মামলা রুজু করেছে।