1. bpdemon@gmail.com : Daily Kaljoyi : Daily Kaljoyi
  2. admindailykaljoyi@gmail.com : admindailykaljoyi :
  3. ratulmizan085@gmail.com : Daily Kaljoyi : Daily Kaljoyi
বিলুপ্ত প্রায় ‘বেওুন বা বেতফল’
বাংলাদেশ । শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫ ।। ১৩ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

বিলুপ্ত প্রায় ‘বেওুন বা বেতফল’

আবু সাঈদ দেওয়ান সৌরভ :
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
  • ৮৯১ বার পড়েছে

বাংলাদেশের একটি বিলুপ্ত প্রায় ফল বেওুন বা বেতফল। এটি অপ্রচলিত ফল হলেও অনেকের কাছে খুবই প্রিয়। আমাদের নতুর প্রজম্ম দেখা তো দূরের কথা হয়ত কখনো নামও শুনেনি এই বেওুন ফলের। বেওুন ফল ও বেতগাছ বর্তমানে আবাসন সংকটের জন্য বিলুপ্তির পথে। এছাড়াও ভিনদেশি গাছের আগ্রাসনে হারিয়ে যাচ্ছে বেওুন ফল ও বেতগাছ। গ্রামে বেত গাছ হারিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বেতফল ও হারিয়ে যাচ্ছে। দুই-তিন দশক আগেও আমাদের দেশের গ্রামাঞ্চলের বন-জঙ্গলে, নিচু ডোবার ধারে নানা রকম বেত দেখা যেত। এখন আর দেখা যায় না। উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে বেত রপ্তানি হয়েছে।

বেত গাছের ফলকে বলা হয় বেত্তুন বা বেতফল অঞ্চল ভেদে এই ফলকে বেথুন, বেথুল, বেতুল, বেতগুলা, বেতগুটি, বেত্তুইন ইত্যাদি নামে ডাকা হয়।  বিশ্বে ৬০০ প্রজাতির বেত রয়েছে। বাংলাদেশে আছে মাত্র ২টি জাত।

আঙ্গুরের মতো দেখতে টক-মিষ্টি স্বাদের এই ফল বেওুন নামে পরিচিত। এই ফল বিভিন্ন রোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। শুধু ওষধ হিসেবে নয়, পুষ্টিগুণেও ভরপুর বেত ফল। এতে প্রোটিন, পটাসিয়াম এবং পেকটিন থাকে। পাশাপাশি থায়ামিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন সি জাতীয় পুষ্টি থাকে বেত ফলে ফ্ল্যাভোনয়েডস, ফেনোলিক অ্যাসিড এবং ট্যানিন জাতীয় যৌগগুলোও বেশি থাকে। আমাশয় রোগের মহাঔষধ এই ফল। দাঁতের গোড়া শক্ত করতে এর কর্মগুন চমৎকার। শুক্রাণু বৃদ্ধিতে এর জুড়ি নেই। এছাড়াও পিত্তথলির সমস্যায় বেত ফলের রস আশ্চর্যজনক কাজ করে।

বেতফল গোলাকার বা একটু লম্বাটে গোলাকার, ছোট ও কষযুক্ত টকমিষ্টি। এর খোসা শক্ত হলেও ভেতরটা নরম। বীজ শক্ত। কাঁচা ফল সবুজ ও পাকলে সাদা রঙের হয়। এটি থোকায় থোকায় হয়। প্রতি থোকায় ২০০টি পর্যন্ত ফল হয়ে থাকে। বেতগাছে ফুল আসে অক্টোবর মাসে আর ফল পাকে মার্চ-এপ্রিল মাসে। ফলের জন্য বেতের চাষ করা হয়না; তবে ফল খেতে সুস্বাদু ও অনেকেরই প্রিয়। বেতগাছ বাংলাদেশের সর্বত্র জন্মে। সাধারণত গ্রামের রাস্তার পাশে, বসতবাড়ির পেছনে, পতিত জমিতে ও বনে কিছুটা আর্দ্র জায়গায় জন্মে। এশিয়ার গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলের অধিকাংশ বনেই বেত জন্মে। বিষুবীয় আফ্রিকার আর্দ্র অঞ্চল থেকে বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান, কম্বোডিয়া, লাওস, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, দক্ষিণ চীন, ফিজি, জাভা ও সুমাত্রা পর্যন্ত এবং সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩০০ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত এ বনগুলিতে বেতগাছ ছড়িয়ে আছে।

বিলুপ্ত প্রায় এই বেওুন ফল ও বেত গাছ সংরক্ষনে কোন উদ্যোগ না নিলে হয়ত একদিন এই গাছের ও বেওুন ফলের জায়গা হবে শুধুই বইয়ের পাতায়, ইন্টারনেট ও জাদুঘরে। আমাদের জীব বৈচিত্র রক্ষার্থে অধিক পরিমাণে বেতগাছ রোপণ ও রক্ষণাবেক্ষনে যত্নবান হওয়া আবশ্যক। ভিনদেশী বিভিন্ন গাছের পাশাপাশি বাড়ির আঙ্গিনায় এই গাছটি রোপন করা যেতে পারে। সরকার ও বৃক্ষপ্রেমীরা গাছটির বিলুপ্তি ঠেকাতে নানা মুখী কার্যক্রম গ্রহন করবে এমনটাই প্রত্যাশা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

Archive Calendar

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০৩১  
প্রকাশক কর্তৃক জেম প্রিন্টিং এন্ড পাবলিকেশন্স, ৩৭৪/৩ ঝাউতলা থেকে প্রকাশিত এবং মুদ্রিত।
প্রযুক্তি সহায়তায় Hi-Tech IT BD