করোনাকালীন দীর্ঘ সময় স্কুল বন্ধ থাকলেও বিদ্যালয় খোলার পর সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার সরকারী প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। উপজেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করে দেখা গেছে বেশীর ভাগ বিদ্যালয়েই ১-২ জন শিক্ষক পাঠদান করছেন অন্য শিক্ষকরা হাজিরা দিয়েই চলে যান। কোন কোন শিক্ষক কয়েক দিনের হাজিরা এক সাথেই দিয়ে দেন।
দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকলেও শিক্ষকদের অনিয়ম আর অবহেলায় এখনও চলছে দ্বায়সারা পাঠদান। ছাত্র-ছাত্রীদের মতো শিক্ষকদের অনুপস্থিতি অভিভাবকদের ভাবিয়ে তুলছে। গতকাল মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) বিভিন্ন স্কুল সরেজমিনে পরিদর্শন কালে এমনই চিত্র দেখা গেছে। উপজেলার ফেনারবাঁক ইউনিয়নের ভূতিয়ারপুর-সুজাতপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুপুরে ২ জন বদলি শিক্ষক ক্লাসে পাঠদান করতে দেখা গেছে।
এই স্কুলের ৪ জন শিক্ষকের মধ্যে কোন শিক্ষককেই স্কুলে উপস্থিত পাওয়া যায়নি। পাঠদানরত বদলি শিক্ষক আবুল বাশার কে স্কুলের শিক্ষক কি-না জানতে চাইলে বলেন, ১ম শ্রেণী থেকে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের আমরা প্রাইভেট পড়াচ্ছি। শরীফপুর পকেট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও লালপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় বেলা তিনটার দিকে ছিল তালাবদ্ধ, তবে শরীফপুর পকেট প্রাইমারীর প্রধান শিক্ষক জানান তিনটায় তারা চলে আসেন। গজারিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক সহ দুইজন ছিলেন অনুপস্থিত থাকলেও পরে এক মহিলা শিক্ষককে ডেকে আনা হয়েছে।
জামলাবাজ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক অফিস কাজে উপজেলা সদরে আসলেও ১ জন সহকারী শিক্ষকে উপস্থিতে বিদ্যালয়টি ছিল ছাত্র শূন্য। রামপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২জন সহকারী শিক্ষক অনুপস্থিত ছিলেন। কাশিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শরীফপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর উপস্থিতি ছিল সন্তোষজনক। লক্ষীপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চানপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রায় সোয়া ৩ টায় স্কুল বন্ধ পাওয়া যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ ক’জন অভিভাবক বলেন, করোনার কারণে শিক্ষার যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরন করা সম্ভব না। ভেবেছিলাম স্কুল খোলার পর শিক্ষকরা ছাত্রদের ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নেবেন। কিন্তু অধিকাং শিক্ষকরা নিয়মিত স্কুলে না আসায় আমাদের ছেলে মেয়েদের ভবিষ্যৎ নিয়ে দূঃশ্চিন্তায় আছি। শিক্ষকদের অনুপস্থিতি দেখে মনে হয় তাদের তদারকি করার যেন কেউ নাই। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শরীফ উদ্দিন বলেন, যে সকল শিক্ষকরা অনুপস্থিত ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক শোকজ করা হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম আব্দুর রহমান বলেন, ৪ টার পূর্বে কোন স্কুল বন্ধ থাকার নিয়ম নেই। যারা স্কুল ফাকি দিয়ে অনিয়ম করে তাদের খোজ নিয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।