নীলফামারীতে ট্রেনের সাথে ইজিবাইকের সংঘর্ষে ৪ জন মারা গেছে। গুরুতর আহত হয়েছে ইজিবাইক চালকসহ আরও ৫ যাত্রী। যাত্রীরা সবাই উত্তরা ইপিজেডের মহিলা শ্রমিক। বুধবার (২৬ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে নীলফামারী সদরের দারোয়ানী রেল ক্রসিংয়ে ওই দূর্ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকাল সাড়ে ৬টার দিকে উত্তরা ইপিজেডের ৮জন মহিলা শ্রমিক ইজিবাইক যোগে কর্মস্থলে যাচ্ছিল। ইজিবাইকটি দারোয়ানী রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় খুলনা থেকে ছেড়ে আসা চিলাহাটিগামী আন্তঃনগর রুপসা এক্সপ্রেস ট্রেনের সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে যাত্রীসহ ইজিবাইকটি দুমড়ে মুচড়ে রেলপথ থেকে প্রায় ৫০ গজ দূরে ছিটকে পড়ে যায়।
ঘটনাস্থলে মারা যায় সদরের সোনারায় ইউনিয়নের দারোয়ানী এলাকার ধনীপাড়ার আশরাফ আলীর স্ত্রী শেফালী বেগম (৩৫)। স্থানীয়রা দ্রুত আহতদের উদ্ধার করে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে নেযার পথে একই এলাকার কোরানীপাড়ার বেলাল হোসেনের স্ত্রী ছায়া বানু (২৬) ও ধনীপাড়ার মোশাররফ হোসেন বদির স্ত্রী রুমা আকতার (২৫) এবং রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে ধনীপাড়ার আরমান হোসেনের স্ত্রী মিনারা আকতার (২২) মারা যায়। এ দূর্ঘটনায় আহতরা হলেন ইজিবাইক চালক আপন হোসেন (২৮), নাজমিন আকতার (৩০), মিনা আকতার (৩০), রওশন আরা (৩৪) ও রোমানা আকতার (২৮)। এদের সকলের বাড়ি দারোয়ানী এলাকায়।
সোনারায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম শাহ চার জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে জানান, ঘন কুয়াশার কারনে এ দূর্ঘটনাটি ঘটতে পারে। তিনি বলেন, এ রেলপথে রেলক্রসিংগুলো অরক্ষিত থাকায় এসব যানবাহন নির্বিঘ্নে চলাচল করায় দূর্ঘটনার সংখ্যা বাড়ছে। সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রহমান বিশ্বাস তিন যাত্রী নিহতের খবর নিশ্চিত করে জানান, কুয়াশার কারনে ইজিবাইক চালক ট্রেনটি দেখতে না পেয়ে এ দূর্ঘটনাটি ঘটতে পারে।
স্থানীরা বলছেন, অরক্ষিত এই রেল ক্রসিং পারাপারের সময় প্রায় দূর্ঘটনা ঘটে। গেট ও গেটম্যান না থাকার কারণে ঝুঁকির মধ্যে পারাপার হতে হয় এই রেলক্রসিংটি। আজকেও চোখের সামনে তরতাজা প্রাণ গুলোর মৃত্যু দেখে আমরা হতভম্ব। নীলফামারী ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা মোহাম্মদ নিয়ারাজ বলেন, আমরা দূর্ঘটনার খবর পাওয়া পাত্র দ্রুত ছুটে এসে উদ্বার কাজে নিয়োজিত হই। এখানে ১জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। চালকসহ বাকী ৯ জনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে তাদের মধ্যে ৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। জানা গেছে পথিমধ্যে আরও দু’জন মারা গেছে।
নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের ইমারজেন্সী মেডিক্যাল অফিসার কাজী আব্দুল মমিন বলেন, আজ সকালে ট্রেন দূর্ঘটনা জনিত ৯ জনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২জন পথিমধ্যে মারা গেছে। ৩ জনের অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক বিধায় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আর বাকী দু’জন চিকিৎসাধীন রয়েছে।
নীলফামারী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রউপ বলেন, ঘটনাস্থলে নিহত নারীকে দাফন কার্যের জন্য পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকী দুজনের লাশ হাসপাতালের মর্গে আছে তাদেরকেও পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। আর ৩জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বিধায় রংপুর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।