1. bpdemon@gmail.com : Daily Kaljoyi : Daily Kaljoyi
  2. ratulmizan085@gmail.com : Daily Kaljoyi : Daily Kaljoyi
টাঙ্গাইল মির্জাপুরে মা ও ৩ মেয়েকে পুড়িয়ে হত্যার বিচার ৭ বছরে শুরুই হয়নি
বাংলাদেশ । মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ।। ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

টাঙ্গাইল মির্জাপুরে মা ও ৩ মেয়েকে পুড়িয়ে হত্যার বিচার ৭ বছরে শুরুই হয়নি

আতিফ রাসেল:
  • প্রকাশিত: রবিবার, ১০ অক্টোবর, ২০২১
  • ৩১৩ বার পড়েছে
টাঙ্গাইল মির্জাপুরে মা ও ৩ মেয়েকে পুড়িয়ে হত্যার বিচার ৭ বছরে শুরুই হয়নি

টাঙ্গাইল মির্জাপুরে মাসহ তার ৩ মেয়েকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনার বিচার সাত বছরেও শুরু হয়নি। এতে হতাশা প্রকাশ করেছেন স্ত্রী ও সন্তান হারানো মজিবর রহমান, তাঁর মা জবা বেগম ও শ্যালক মোফাজ্জল হোসেন।

আদালত সূত্র জানায়, টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর আগে মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। পরে একজন আসামি অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন করেন। উচ্চ আদালত এই পিটিশনের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিচারকাজ স্থগিত করেছেন। ফলে থেমে আছে চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার বিচার।

মামলার এজাহার অনুযায়ী,টাঙ্গাইল মির্জাপুর উপজেলায় দক্ষিণ সোহাগপাড়া গ্রামের প্রবাসী মজিবর রহমানের স্ত্রী হাসনা বেগম তাঁর তিন মেয়ে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে বসবাস করতেন। বড় মেয়ে মনিরা আক্তার মির্জাপুরের গোড়াই উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। একই গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম মনিরা আক্তারকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু এতে তার পরিবারের সদস্যরা রাজি ছিলেন না।

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে জাহাঙ্গীর তাঁর সঙ্গীদের নিয়ে ২০১৪ সালের ৬ অক্টোবর রাত আড়াইটার দিকে হাসনা বেগমের বসতঘরের দরজার নিচ এবং জানালা দিয়ে পেট্রল ঢেলে দেন। পরে অগ্নিসংযোগ করেন। এতে দগ্ধ হয়ে ঘরেই মারা যান হাসনা বেগম (৩৮), তাঁর তিন মেয়ে মনিরা আক্তার (১৪), বাক্‌প্রতিবন্ধী মীম আক্তার (১১) ও নার্সারির শিক্ষার্থী মলি আক্তার (৭)।

পরদিন হাসনা বেগমের ভাই মোফাজ্জল হোসেন বাদী হয়ে জাহাঙ্গীর আলমসহ ১০ জনকে আসামি করে মির্জাপুর থানায় মামলা করেন। ঘটনার কিছুদিন পর জাহাঙ্গীর আলম ও নুর মোহাম্মদ নামের দুই আসামি গ্রেপ্তার হন। দুজনই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। মামলাটি প্রথমে মির্জাপুর থানা এবং পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তদন্ত করে। তদন্ত শেষে সিআইডির উপপরিদর্শক মো. সোহরাব উদ্দিন নয় আসামির বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। আসামিরা হলেন জাহাঙ্গীর আলম, নুর মোহাম্মদ, ইসমাইল হোসেন, মোহাম্মদ আবদুস সামাদ, আবুল বাশার, আবদুল মান্নান, মীর আসাদুল, ওয়াসিম মিয়া ও হারুন অর রশিদ।

২০১৬ সালের ২ মে মামলাটি বিচারের জন্য টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আসে। পরে ওই বছর ১৬ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। আসামিদের বিরুদ্ধে ঘরে ঢুকে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা এবং সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়।

এই মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি মনিরুল ইসলাম খান জানান, অভিযোগ গঠনের পর মামলার আসামি হারুন অর রশিদ অভিযোগ থেকে অব্যাহতির জন্য হাইকোর্টে একটি রিভিশন মামলা করেন। উচ্চ আদালত মামলার রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কার্যক্রম স্থগিত করার আদেশ দেন। এ জন্য মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণ হচ্ছে না।

তিনি জানান, অভিযোগ গঠনের পর ২০১৬ সালের ১৯ জুলাই সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য ছিল। সেদিন রাষ্ট্রপক্ষ মামলার বাদীসহ তিন সাক্ষী হাজির করেছিল। কিন্তু উচ্চ আদালতের আদেশ থাকায় সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়নি। মামলার প্রধান আসামি জাহাঙ্গীর আলম এখনো টাঙ্গাইলের কারাগারে। অন্য আসামিরা জামিনে।

মামলার সব আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছেন হাসনা বেগমের পরিবারসহ মানবাধিকারকর্মীরা।হাসনা বেগমের স্বামী মজিবর রহমান আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘কত মাইনসের বিচার অইলো। ছয় মাসেও বিচার শ্যাষ অইলো শুনলাম। কিন্তু আমার বউ-পোলাহান মরার সাত বছর পর বিচারই শুরু অইলো না। এইডা কোন দ্যাশ।’

মজিবরের মা জবা বেগম জানান, ছেলের বউ আর নাতনিদের হত্যাকারীর বিচারের আশায় চেয়ে থেকে তাঁর স্বামী চাঁন মিয়া দেড় বছর আগে মারা গেছেন। ক্ষুব্ধ জবা প্রশ্ন করেন, ‘বিচার কি সব পানি হয়ে গেল?’

বাদী মোফাজ্জল হোসেন দৈনিক কালজয়ী’কে জানান, ‘বোন-ভাগনি যে কত আপন তা কেউ বুঝব না। আর আমি হেই আপন জিনিস হারাইছি। ওরা তো আর ফিরা আইবো না। ওগো মারার বিচারের জন্য দিনের পর দিন অপেক্ষা করতাছি। কিন্তু কেউ মুখ ফিরা তাকায় না।’

টাঙ্গাইলের মানবাধিকারকর্মী মাহমুদা শেলী জানায়, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে সব জটিলতা নিরসন করে মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করা প্রয়োজন। এভাবে দিনের পর দিন বিচার প্রক্রিয়া ঝুলে থাকলে বিচার পাওয়ার পথ সংকুচিত হবে। এতে অপরাধীরা উৎসাহিত হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

Archive Calendar

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
প্রকাশক কর্তৃক জেম প্রিন্টিং এন্ড পাবলিকেশন্স, ৩৭৪/৩ ঝাউতলা থেকে প্রকাশিত এবং মুদ্রিত।
প্রযুক্তি সহায়তায় Hi-Tech IT BD