1. bpdemon@gmail.com : Daily Kaljoyi : Daily Kaljoyi
  2. ratulmizan085@gmail.com : Daily Kaljoyi : Daily Kaljoyi
জাপার সদস্য সচিবের বিরুদ্ধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ
বাংলাদেশ । মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ ।। ৭ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

জাপার সদস্য সচিবের বিরুদ্ধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

এসকেডি/দৈনিক কালজয়ী
  • প্রকাশিত: রবিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৩
  • ৪৮৬ বার পড়েছে
নীলফামারীর সৈয়দপুরে উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতির পর এবার সদস্য সচিবের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের পোড়ারহাট সিদ্দিকীয়া আলিম মাদরাসার জনবল নিয়োগে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন মাদরাসার সভাপতি ও উপজেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব জি এম কবির মিঠু। নীলফামারী-৪ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আহসান আদেলুর রহমানের স্থানীয় প্রতিনিধি হিসেবে তাঁর নামে মাদরাসার ৭টি পদের বিপরীতে এই অর্থ নেয়া হয়েছে বলে প্রার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ।
জানা যায়, গত শনিবার (৪ নভেম্বর) এই নিয়োগ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৭টি পদে মোট ৪২ জন প্রার্থী নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। লোক দেখানো এই পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থীদের কৌশলে বাদ দিয়ে টাকার বিনিময়ে নিজস্ব লোকদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এতে আয়া পদে নিয়োগ কমিটির সদস্য ও সাবেক ইউপি মেম্বার সায়েদ আলীর মেয়ে লাকী বেগমকে, মাদরাসার জমিদাতা মৃত শমসের আলীর ছেলে আনিছুর রহমানকে পিয়ন পদে ও মোজাহারুল ইসলামের ছেলে রিপন কে নৈশ প্রহরী পদে এবং ভারপ্রাপ্ত সুপার জিয়াউল হকের আত্মীয় আবু বক্করের ছেলে আল মিজানুর রহমান উজ্জলকে অফিস সহকারী কাম হিসাব রক্ষক পদেসহ সুপার, কম্পিউটার অপারেটর ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে আরও ৩ জনকে নিয়োগ দিয়েছে কমিটি।

এসব নিয়োগের ক্ষেত্রে মোটা অংকের টাকা গ্রহণের অভিযোগ করে অফিস সহকারী কাম হিসাব রক্ষক পদের প্রার্থী আরজু আরার স্বামী আজিজুল হক বলেন, মাদরাসার সভাপতি জি এম কবির মিঠু ও ভারপ্রাপ্ত সুপার জিয়াউল হক আমার কাছে ১৫ লাখ টাকা চেয়েছিল। এত টাকা দিতে পারিনি বলে অযোগ্য হলেও ভারপ্রাপ্ত সুপারের আত্মীয় আল মিজানুর রহমান উজ্জল নামে প্রার্থীকে নিয়োগ দিয়েছে। নিশ্চয়ই সে বেশি টাকা দিয়েছে। এব্যাপারে ছেলের নিয়োগের কথা স্বীকার করে আবু বক্কর বলেন, নিয়োগের ক্ষেত্রে খরচ তো আছেই। তবে মাদরাসার সুপার জিয়াউল হক আমার আত্মীয় হওয়ায় বেশি টাকা লাগেনি। টাকা ছাড়া কি আর নিয়োগ হয়। তাই বিভিন্ন খরচ বাবদ কিছু টাকা তো দিতেই হয়েছে।

একইভাবে অভিযোগ করেন, মাদরাসাটির সাবেক সহকারী শিক্ষক বদর উদ্দিন বজো মুন্সির ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, আমার ভাই আনিছুল ইসলামকে সুপার পদে নিয়োগ দেয়ার কথা ছিল। সে অনুযায়ী প্রায় ২ বছর আগেই ১০ লাখ টাকা নিয়েছেন সভাপতি ও সুপার। কিন্তু আমার ভাইয়ের অন্যত্র নিয়োগ হওয়ায় টাকা ফেরত চাইলেও তারা টাকা দেয়নি। তার বদলে আমাদের অন্য কেউ চাইলে তাকে নিয়োগ দেয়া হবে বলে আস্বস্ত করে। এতে আমি নৈশ প্রহরী পদে এবং আমার ভাবী মাহমুদা হিসাব রক্ষক এবং ছোট ভাই আবু জার কম্পিউটার অপারেটর পদে আবেদন করি। কিন্তু তারা আরও টাকা দাবী করে। তা দিতে না পারায় আমাদের নেয়া হয়নি। বরং যারা আরও বেশি টাকা দিয়েছে তাদেরকেই নিয়োগ দিয়েছে। তিনি বলেন, আমার জানা মতে কিছু কিছু পদে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকাও নিয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, নিয়োগে বাণিজ্য হয়েছে বলেই তো পরীক্ষার সময় আগত সাংবাদিকদের ম্যানেজ করতে প্রায় ২ লাখ টাকা ব্যয় করেছেন সভাপতি। এছাড়াও বিভিন্ন ক্ষেত্রে টাকা দিতে হয়েছে বলেও জানান তারা। এক্ষেত্রে যোগ্যরা বঞ্চিত হয়েছেন আর অনিয়মের মাধ্যমে গুটি কয়েক লোক লাভবান হয়েছেন। রবিবার (৫ নভেম্বর) সকালে মাদরাসায় গিয়ে ভারপ্রাপ্ত সুপার জিয়াউল হককে না পাওয়ায় তার মুঠোফোন ০১৭২১৫১৮২০২ নম্বরে কল দিলে তিনি অসুস্থ বলে জানান। এসময় তিনি বলেন, নিয়োগ তো শেষ এখন এনিয়ে জেনে কি করবেন? নিয়োগ বাণিজ্য বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, এব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা। সব সভাপতি জি এম কবির জানেন। তার সাথে যোগাযোগ করেন। সভাপতি জি এম কবিরের সাথে যোগাযোগ করতে তাঁর মুঠোফোন ০১৭১৮১০৪০২৯ নম্বরে বার বার কল দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করছেন না। একারণে তার কোন মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

নীলফামারী-৪ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আহসান আদেলুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মোবাইল রিসিভ করেননি। তবে হোয়াটস আপে জানান, নিয়োগ বাণিজ্য করে থাকলে তা সভাপতির বিষয়। এক্ষেত্রে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই। কেননা আমি নিয়োগের বিষয়ে কিছুই জানিনা। নিয়োগ দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের সভাপতি, ভারপ্রাপ্ত সুপার ও নিয়োগ কমিটি। জি এম কবির মিঠু উপজেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব হলেও আমার মনোনীত প্রতিনিধি নন। সৈয়দপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোখছেদুল মোমিন বলেন, পোড়ারহাট মাদরাসার নিয়োগ নিয়ে কিছুই জানিনা। তবে গত শুক্রবার জানতে পারি যে, ওই প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পরীক্ষা আছে এবং সেখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। তাই নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় পুলিশ নিয়োজিত করা হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সভাপতি নিয়োগ দেন এমপি। তাই তার মনোনীত ব্যক্তিরা সভাপতি হয়ে নিয়োগ বাণিজ্য করলে তা তাদেরই দায়।

উল্লেখ্য, ইাতোপূর্বে জি এম কবির মিঠু উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের খালিশা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সভাপতি হিসেবেও নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন বলে অভিযোগ রযেছে। এছাড়া জাতীয় পার্টির উপজেলা সভাপতি আলহাজ্ব জয়নাল আবেদীন ছমির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি হিসেবে ওই প্রতিষ্ঠানে ৪ টি পদে নিয়োগ দিতে গিয়ে বিশাল অংকের টাকার বাণিজ্য করায় স্থানীয় লোকজন পরীক্ষা গ্রহণের দিন তাকে লাঞ্চিত করেছে। পরে তিনি ও স্কুলের প্রধান শিক্ষক দৌড়ে পালিয়ে রক্ষা পেয়েছেন। এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজ ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে। তাই জি এম কবির মিঠু আগাম সতর্কতা অবলম্বন করে এবার আগেই মিডিয়াসহ বিভিন্ন বিভাগকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে নিয়োগ বাণিজ্যকে বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করেছে এবং সফলও হয়েছেন। কিন্তু ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। সেজন্য আড়ালের খবর ক্রমেই বেরিয়ে আসছে বলে মন্তব্য করেছেন সচেতন এলাকাবাসী। এমপি আহসান আদেলুর রহমানের মনোনীত ব্যক্তি হিসেবে জাপা নেতারা এভাবে নিয়োগের নামে অর্থ হাতিয়ে নেয়ায় তোলপাড় চলছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

Archive Calendar

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  
প্রকাশক কর্তৃক জেম প্রিন্টিং এন্ড পাবলিকেশন্স, ৩৭৪/৩ ঝাউতলা থেকে প্রকাশিত এবং মুদ্রিত।
প্রযুক্তি সহায়তায় Hi-Tech IT BD