স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও মুজিব বর্ষ উপলক্ষে চাঁদপুর জেলা পরিষদের আয়োজনে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান চাঁদপুর জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে। ২৮ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় জেলা পরিষদ প্রাঙ্গনে এ সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ।
এ সময় তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধারা হচ্ছে আমাদের দেশের গর্বিত সন্তান। যারা নিজের জীবন বাজি রেখে দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন। এমন মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা দেয়া একটি গৌরবের বিষয়। আর এই বীর মুক্তিযোদ্ধারা যদি সেদিন তাদের জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ না করতেন, তাহলে আমরা আজ স্বাধীন হতাম না, স্বাধীন একটি সুন্দর দেশ পেতাম না।
তিনি বলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে চেতনা নিয়ে এই দেশ স্বাধীন করেছেন, তা আমাদেরকে বাস্তবায়ন করতে হবে। আমরা যে যার, যার অবস্থানে আছি, সেই অবস্থানে থেকে দায়িত্বশীল হয়ে দেশের জন্য কাজ করতে হবে। তাহলে আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়ন করতে পারবো।
তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদেরকে যে শপথ পাঠ করিয়েছেন তা যদি আমরা বাস্তবে হৃদয়ে লালন করি, তাহলে বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়িত হবে।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ওসমান গনি পাটোয়ারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচকের বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মঞ্জুর আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কাউন্সিল নেতা মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আহমেদ মজুমদার, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার ইয়াকুব আলী পাটোয়ারী, ডেপুটি কমান্ডার সিরাজুল ইসলাম বরকন্দাজ প্রমুখ।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ওসমান গনি পাটোয়ারী তার বক্তব্যে বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে ও মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জানাতেই আজকে এই মিলন মেলার আয়োজন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষ শহীদ এবং ২ লক্ষ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে আমরা আজকে যে স্বাধীন দেশ পেয়েছি, সেটি এই বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরই অবদান। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানে আজ আমরা একটি স্বাধীন সুন্দর সার্বভোমত্ব রাষ্ট্র পেয়েছি।
যে জাতি মহান এই নেতাকে সম্মান দেয় না, সে জাতি কখনো উন্নতি করতে পারেনা। তিনি বলেন, নৌকা হচ্ছে একটি সম্মানের প্রতীক। নৌকা হচ্ছে জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতিক। তাই বিভিন্ন নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনা দলীয় ভাবে যাকেই নৌকার মনোনয়ন দিবেন তার পক্ষেই আমাদেরকে কাজ করতে হবে।
এছাড়াও শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্যাংকার মুজিবুর রহমান, চাঁদপুর সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার শামসুল আলম আবুল কালাম চিশতী, কচুয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার জাবের মিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল মাস্টার, মুক্তিযুদ্ধা হাবিবুর রহমান দুলালসহ অন্যান্য মুক্তিযুদ্ধাগন।
অনুষ্ঠানে প্রায় ৪৫০ জন মুক্তিযুদ্ধাকে সংবর্ধনা ও সম্মাননা প্রদান করা হয়। এছাড়া অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা সহ চাঁদপুর শহরের প্রবেশ মুখে বঙ্গবন্ধু গেটে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শুরুতেই কোরআন তেলোয়াত, গীতা পাঠ ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করা হয়।
জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শেখ মহিউদ্দিন রাসেলের সঞ্চালনায় এসময় জেলা পরিষদের কর্মকর্তা, কর্মচারী, জেলা পরিষদের সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য, বীর মুক্তিযুদ্ধা রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক সহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ জন উপস্থিত ছিলেন।