খুনের মামলায় জেল থেকে বেরিয়ে আসার ৪ মাসের মাথায় এবার মা মনোয়ারা বেগম (৬৫)কে ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে ছেলে মমিন দেওয়ান (৪২)।এঘটনার প্রায় তিন ঘন্টার মধ্যে স্থানীয় লোকজনের সহযোগীতায় ঘাতককে আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ।ঘটনাটি ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার পশ্চিম বড়ালি গ্রামে বুধবার (২৭ অক্টোবর) ভোরে ঘটে।
পুলিশ নিহত মনোয়ারা বেগম এর লাশ উদ্ধার করে পোস্টমর্টেমের জন্য চাঁদপুর পাঠিয়েছে।এব্যাপারে নিহত মনোয়ারা বেগমের বড়ভাই রুহুল আমিন বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।ঘাতক মমিন ১৮ বছর পুর্বেও রূপবানু নামে এক নারীকে কুপিয়ে হত্যা করেছিল।বুধবার দুপুরে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শহীদ হোসেন প্রেসব্রিফিং করে গনমাধ্যমকর্মীদের এসব তথ্য জানান।
জানা গেছে,ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার পশ্চিম বড়ালি গ্রামের মরহুম আব্দুল হাশেম দেওয়ানের ছেলে মমিন দেওয়ান বুধবার (২৭ অক্টোবর) ভোরে তার মা মনোয়ারা বেগমকে ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে।এরপর সে পালিয়ে যায়।সংবাদ পেয়ে থানা পুলিশ বুধবার ভোরে মৃতের লাশ উদ্ধার করে।ঘাতক মমিনকে ধরতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার ছবি পোস্ট করে এলাকাবাসীর সহযোগিতা চান থানা অফিসার ইনচার্জ।
এরপর সকাল ৭টায় পৌর এলাকার পুর্ব মিরপুর গ্রামে তাকে হাটতে দেখে পুলিশকে সংবাদ দেয় স্থানীয়রা।তাৎক্ষনিক পুলিশ তাকে আটক করতে সক্ষম হয়।এরপর দুপুরে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শহীদ হোসেন গনমাধ্যমকর্মীদের হত্যার বিষয়ে প্রেসব্রিফিং করে এসব তথ্য প্রদান করেন।
স্থানীয়রা জানায়,এক সন্তানের জনক মমিন ইতিপুর্বে ২০০৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারী একই বাড়ির রূপবানু নামে এক নারীকে কুপিয়ে হত্যা করেছিল।পরে সে পালিয়ে সৌদিআরবে চলে যায়।২০১১ সালে সে দেশে ফিরে আসলে পুলিশ তাকে আটক করে।পরবর্তীতে তিন বছর জেল ভোগের পর মা মনোয়ারা বেগমের সহযোগিতায় জামিনে বেরিয়ে আসে মমিন।
এরপর ২০১৪ সালে পৌর এলাকার চরকুমিরা গ্রামে রাবেয়া বেগমকে বিয়ে করে সে।তাদের ঘরে আছিয়া আক্তার নামে ৬ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।হত্যা মামলায় জামিনে বেরিয়ে আসলেও নিয়মিত হাজিরা না দেয়ার কারণে ২০১৭ সালে সে আবারো জেল হাজতে যায়।পরে চলতি বছরের জুলাই মাসে সে জামিনে বেরিয়ে আসে।
ঘাতক মমিনের ভাগ্নে আশিক জানায়,মমিন মানসিক ভাবে কিছুটা বিকারগ্রস্থ।প্রায়শই লোকজনকে হত্যা করার হুমকি দিত।এদিকে দুপুরে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শহীদ হোসেন গনমাধ্যমকর্মীদের প্রেসব্রিফিংয়ে জানান,হত্যাকান্ডের সংবাদ পেয়ে তিনি তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধারের পাশাপাশি পুলিশের বিভিন্ন টিম চাঁদপুর লঞ্চঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়।
কিন্তু ঘাতক মুঠো ফোন ব্যবহার না করায়,তাকে ধরতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার ছবি পোস্ট করে তাকে ধরতে স্থানীয়দের সহায়তা চান।পরে সকাল ৭টার দিকে পুর্ব মিরপুর এলাকা থেকে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় তাকে আটক করতে সক্ষম হই।তিনি জানান,ঘাতক মমিন ইতিপুর্বে একটি হত্যা মামলার আসামী।
তিনমাস পুর্বে সে জেল থেকে জামিনে বেরিয়ে আসে।সেই থেকে সে মা ও তার ভাগ্নিকে হত্যার হুমকি দিতো।হত্যাকান্ড ব্যবহৃত দা উদ্ধার করা হয়েছে।নিহত মনোয়ারা বেগমের বড় ভাই রুহুল আমিন বাদী হয়ে ফরিদগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছে।প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মমিন মাকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।