1. bpdemon@gmail.com : Daily Kaljoyi : Daily Kaljoyi
  2. ratulmizan085@gmail.com : Daily Kaljoyi : Daily Kaljoyi
গরিব কবি গুলজার হোসেন ও তার কাব্য প্রতিভা
বাংলাদেশ । সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩ ।। ৩রা রমজান, ১৪৪৪ হিজরি
ব্রেকিং নিউজ

গরিব কবি গুলজার হোসেন ও তার কাব্য প্রতিভা

রেদ্ওয়ান আহমদ
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ১৩২৭ বার পড়েছে
গরিব কবি গুলজার হোসেন ও তার কাব্য প্রতিভা

কবিতা তো অনেকেই লিখেন,কজনই বা ইতিহাস গড়েন! সেই ইতিহাস গড়েই দেখিয়ে দিয়েছেন ঝিনাইদহের গরিব কবি গুলজার হোসেন।গরিব কবি তার উপাধি হলেও কবিতায় তিনি বিত্তবান।পেশায় একজন সাধারণ বালুশ্রমিক,নেই তেমন কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা,পরিবারে অর্থাভাবে ভরপুর।অথচ,সেই ঘর্মাক্ত শরীর নিয়েই লিখেছেন প্রায় আড়াই হাজার কবিতা।এ পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে তার তিন তিনটি কাব্যগ্রন্থ।

আমি মাঝে মাঝে ভেঙে পড়ি
অন্ধদের দৌড় দেখে, অন্ধকারে দৌড় দেখে।
কয়েকহাজার বছরের দৌড়
পূর্বপুরুষ থেকে এখন এপর্যন্ত
সেই বিশ্বাসের সড়কে দৌড়াচ্ছে মেরাথনের কাঠি নিয়ে।

ভয়ংকর জঙ্গলে পাড়ি দিয়ে, সমুদ্রে পাড়ি দিয়ে
মরু, আগ্নেয়গিরি পাড়ি দিয়ে
দৌড়াতে দৌড়াতে সন্তানের বীজ বোনে, সন্তান হয়
সেও দৌড়ায় পিতাদের দেখানো পথে।

অন্ধদের মৃত্যু দৌড় কবিতার অংশ বিশেষ।নিজের দুঃখবোধ,আনন্দ-উল্লাস আর পাওয়া না পাওয়ার কথা দিয়েই কবিতার মালা গাঁথেন গুলজার হোসেন। অথচ ভোর হতে না হতেই কি শ্রমসাধ্য সকালই না শুরু হয় তাঁর! ট্রাক থেকে বালু নামানোই তাঁর একমাত্র পেশা ও আয়-রোজগারের পথ।

গুলজার হোসেনের বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার মহারাজপুর নামক গ্রামে।১৯৮০ সালে এক অসচ্ছল পরিবারে তাঁর জন্ম।ছোটবেলায় গ্রামের মহারাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন।কিন্তু,এরপর আর স্কুলে যাওয়া হয়নি তার।১০ বছর বয়সেই পড়ালেখার পাঠ চুকিয়ে কাজে নেমে পড়তে হয় তাকে।

প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নিতে না পারলেও পড়াশোনার প্রতি ছিলো তার প্রবল আগ্রহ।মাঠের কাজ,আইসক্রিমের হকারি,ভ্যান চালানো,যখন যা-ই করেছেন,তার মধ্যেই সুযোগ করে করে বই পড়তেন।অনেক সময় নিজে বই কিনতে না পেরে অন্যের কাছ থেকে ধার করেও পড়তেন।গুলজার হোসেন বলেন,অভাবের কারণে পড়তে পারিনি,তবে অজ্ঞ থাকবো না,এটা পণ করেছিলাম।তাই জ্ঞানার্জনের জন্য পড়ালেখা করতাম।

বই পড়তে পড়তেই কবিতার রাজ্যে প্রবেশ তার।কিন্তু কাগজ কেনার সামর্থ্য ছিলো না।অর্থভাবে সিগারেটের প্যাকেট কুড়িয়ে এনে বাড়িতে বসে সেটায় লিখে ফেলেন আহ্বান নামের একটি কবিতা।তখন ২০০১ সাল।তারপর থেকে আজ পর্যন্ত অনবরত লিখে চলছেন গরিব কবি গুলজার হোসেন।ছিলো না নাম,যশ বা খ্যাতি লাভের কোনো ইচ্ছে।দৃঢ় চিত্তে লিখে গেছেন প্রায় ২ হাজার ৪০০ কবিতা,২১০টি গান এবং ১০টি প্রবন্ধ।

ঝিনাইদহ শহরের কাঞ্চনপুর এলাকায় টিনের চালের দুই ঘরের একটি বাসা ভাড়া নিয়ে সেখানে স্ত্রী সেলিনা বেগম ও দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করেন তিনি।ভাড়া বাড়ির একটি অংশে চলে তার নিয়মিত কাব্যচর্চা।বিভিন্ন লেখকের বই ঘরটাকে আলোকিত করে রেখেছে যেনো।গুলজার হোসেন বলেন,আমি কবিতা লিখি আমার ভালো লাগার জন্য,নিজের জন্য।কবিতা-ই আমার ভাষা।

অত্যন্ত সংগ্রামী ও স্বশিক্ষিত এই মানুষটি তাঁর কবিতায় তুলে ধরেন বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও শ্রমিক শ্রেণির বঞ্চনার কথা।লিখে যান সমাজের নিম্নবর্গীয় মানুষদের দুঃখ-কষ্ট,বেদনা ও সুখ-দুঃখের অনুভূতি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

Archive Calendar

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
প্রকাশক কর্তৃক জেম প্রিন্টিং এন্ড পাবলিকেশন্স, ৩৭৪/৩ ঝাউতলা থেকে প্রকাশিত এবং মুদ্রিত।
প্রযুক্তি সহায়তায় Hi-Tech IT BD