দেশে চলমান ইউনিয়ন নির্বাচনে ষষ্ট ধাপে অনুষ্টিত হচ্ছে ওসমানীনগর উপজেলার ৮ ইউপির নির্বাচন।এবারের ইউনিয়ন নির্বাচন প্রথমবারের মতো অনুষ্টিত হচ্ছে ইভিএম- এ। এ নিয়ে উপজেলার ভোটাররা রয়েছেন শংকিত। এ অবস্থায় ভোটদানের পদ্ধতি সম্পর্কে ব্যাপক কোনো প্রচার-প্রচারণা বা অধিকতর প্রশিক্ষণের আয়োজনও নেই নির্বাচন কমিশনের। ফলে ভোটপ্রদানে ঘটতে পারে সময় ক্ষেপন, কমে যেতে পারে ভোট গ্রহন এমন আশঙ্কা করছেন ভোটাররা।উপজেলার একাধিক ভোটারের সাথে আলাপ করে জানা যায়, ‘ইভিএম’ সম্পর্কে তাদের নূন্যতম কোনো ধারণাই নেই। এমন অনেক ভোটার রয়েছেন বাস্তবে-তো দূরের কথা, ছবিতেও দেখেননি ‘ইভিএম’ মেশিন। কিভাবে ভোট দিতে হয়, পছন্দের প্রার্থীর বাক্সে ঠিকমত ভোট পৌছবে কি-না, ভোটের গোপনীয়তা থাকবে কি-না? এসব বিষয় নিয়ে শঙ্কিত বেশিরভাগ ভোটার। কেউ কেউ মনে করছেন ইভিএমের ভোটে কারচুপি হবে।
গ্রামের অধিকাংশ মানুষ নিরক্ষর বা অল্প শিক্ষিত। যুগ যুগ ধরে তারা ব্যালটেই ভোট দিয়ে অভ্যস্থ। হঠাৎ করে ‘ইভিএম’ পদ্ধতি চালু করায় বিপাকে পড়েছেন তারা। একসাথে একটি ইউনিয়নের সকল কেন্দ্রে ‘ইভিএম’ পদ্ধতি চালু করা সময়োপযোগী হয়নি। প্রতি ইউনিয়নের সদর কেন্দ্রে অথবা প্রতি উপজেলা সদর কেন্দ্রে পরীক্ষা মূলকভাবে চালু করা উচিৎ ছিল। ধীরে ধীরে মানুষকে সচেতন করা যেত।তাছাড়া ‘ইভিএম’ এ ভোটদানের পদ্ধতি সাধারণ মানুষকে জানাতে তেমন কোনো প্রশিক্ষণ বা প্রচার-প্রচারণাও নেই নির্বাচন কমিশনের। উচিৎ ছিল রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ গ্রামে-গঞ্জে বিশেষ প্রচার-পাবলিসিটি করা। শুধু কয়েক ঘন্টার ‘মক’ (প্রশিক্ষণ) ভোটের আয়োজন করেই দায় সারছে নির্বাচন কমিশন।এমন অভীযোগ রয়েছে একাধিক প্রার্থীর।প্রার্থীরা আরও জানান, গ্রামে এখনও অনেক মানুষ আছে যারা বাটন মোবাইল-ই চালাতে জানেন না। সেইসব মানুষ হুট করে ‘ইভিএম’ এ ভোট প্রদান করবেন কিভাবে? বিষয়টি নিয়ে চরম বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখিন হয়েছেন ভোটাররা। বিশেষ করে মহিলা ভোটারদের নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন অভিভাবকরা। ইতিমধ্যেই অনেক মহিলা ভোটার ভোটকেন্দ্রে যেতে অনিহা প্রকাশ করছেন।
এছাড়াও ‘ইভিএম’ সম্পর্কে ধারণা নেই খোদ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট অনেক কর্মকর্তাদেরও। তাদেরকে সাময়িকভাবে অল্প কিছু প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। তবে টেকনিক্যাল কোনো ধারণাই নেই তাদের। প্রার্থীর এজেন্টদের অবস্থাও একই। কাছে থেকেও বুঝতে পারবেন না, কি হচ্ছে ‘ইভিএম’ এ। এ অবস্থায় এজেন্ট থাকা না থাকা সমান ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ বিষয় জানতে চাইলে ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবু লায়েশ দুলাল বলেন, ‘ইভিএম-এ ভোটপ্রদান সম্পর্কে ভোটারদেরকে প্রশিক্ষণ দিতে আগামী ২৯ জানুয়ারি উপজেলার ৮ টি ইউনিয়নের সবকটি কেন্দ্রে সকাল ১০ টায় ‘মক ভোট’ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরও প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এ নিয়ে শঙ্কার কিছু নেই।’